বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের গর্বিত অংশীদার হিসেবে বিজিবি’র নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি নির্ভর ও যুগোপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিজিবি ওয়েব বেজড ই-রিক্রুটমেন্ট সফটওয়্যার তৈরির কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। আজ যার সফলতার দ্বার উন্মোচিত হলো— এই সফটওয়্যারটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে। এখন থেকে বিজিবিতে অনলাইনে নিয়োগের আবেদন করা যাবে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিজিবি সদর দফেতর পিলখানায় আয়োজিত ই-রিক্রুটমেন্ট সফটওয়্যারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, রিক্রুটমেন্ট হলো একটি বাহিনীর দক্ষ সৈনিক বাছাইয়ের মূল ভিত্তি। নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক ও স্বচ্ছ হলে বাহিনী মেধাবী, চৌকস ও দক্ষ সৈনিক পাবে। আর শুধুমাত্র একজন দক্ষ সৈনিকই পারে দেশমাতৃকার সীমান্ত সুরক্ষা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বলিষ্ঠ অবদান রাখতে পারে। বিজিবির ই-রিক্রুটমেন্ট সফটওয়্যারটি সঠিক প্রার্থী নিরূপণ করে যোগ্য, মেধাবী, দক্ষ ও চৌকস সৈনিক নিয়োগে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সহায়ক ও বলিষ্ঠ অবদান রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মহাপরিচালক বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথপরিক্রমায় তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উপনীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এ রূপান্তরের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
ই-রিক্রুটমেন্ট সফটওয়্যারের সুবিধা
১. এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে দেশের সেবায় আগ্রহী প্রার্থীগণ joinborderguard.bgb.gov.bd টাইপ করে নিজে নিজেই বিজিবিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং মোবাইল ব্যাংকিং/বিকাশ/নগদ/রকেট এর মাধ্যমে আবেদন ফি পরিশোধ করতে পারবেন।
২. বর্তমান পদ্ধতিতে প্রার্থীর ছবি অনলাইন আবেদনের সময়েই গ্রহণের ব্যবস্থা রয়েছে এবং এতে সুরক্ষিত Encrypted QR Code থাকায় প্রতারণার কোনও সুযোগ নেই।
৩. এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আবেদনকারী তার শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য পূরণ করার পর সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতীয় ডাটাবেজ থেকে তথ্য যাচাই করতে পারবে। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা এবং একইসঙ্গে মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন আরও সুদৃঢ় হবে।
৪. এই সফটওয়্যার প্রার্থীর আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করার পাশাপাশি বিজিবি’র রিক্রুটমেন্ট কার্যক্রমের অন্যান্য সব বিষয়াদি যেমন- প্রার্থীদের জেলাভিত্তিক নির্বাচন কেন্দ্র নির্দিষ্টকরণ, পরীক্ষা সংক্রান্ত যেকোনও নির্দেশনা অবহিতকরণ, ফলাফল প্রেরণ ইত্যাদি কাজ অনেক সহজ হবে।
৫. এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালীন হেল্পলাইন স্থাপনের মাধ্যমে ২৪/৭ প্রার্থীদের আবেদন ও নিয়োগ সংক্রান্ত যেকোনও সমস্যার সমাধান দেওয়া সম্ভব হবে।
৬. এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আবেদনকারী কোনও প্রতারক বা দালালচক্রের প্রভাব ছাড়াই আবেদন প্রক্রিয়ার সব কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে নিজস্ব মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে বিজিবি’র গর্বিত সদস্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন।
উল্লেখ্য, কালের পরিক্রমায় এবং তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সামগ্রিক নিয়োগ প্রক্রিয়া (লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং মেডিক্যাল চেকআপ) সম্পূর্ণরূপে স্বয়ংক্রিয় করার লক্ষ্যে এই সফটওয়্যারের আধুনিকীকরণ অব্যাহত থাকবে বলে জানান বিজিবির কর্মকর্তারা।