মোবাইলে বাংলা এসএমএসের মূল্য অর্ধেকে নেমে আসছে। একুশের প্রথম প্রহর থেকে বাংলা বর্ণে এসএমএস পাঠালে খরচ পড়বে ২৫ পয়সা বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম সাংবাদিকদের সংগঠন টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে তিনি এ তথ্য জানান।
টিএমজিবির আহ্বায়ক মুহম্মদ খানের সঞ্চালনায় ‘প্রযুক্তিতে বাংলা: চাওয়া, পাওয়া ও আকাঙ্ক্ষা’শীর্ষক এ ওয়েবিনারে জাতিসংঘ টেকনোলজি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান, এসবিকে টেক ভেঞ্চারের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ চার সংগঠন বেসিস, বিসিএস, আইএসপিএবি এবং বাক্কোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য দেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম খাতের নেতৃবৃন্দ।
ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টারের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল সদস্য সুমন আহম্মেদ সাবির। মূল প্রবন্ধে তিনি দেশে প্রযুক্তিখাতে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোকপাত করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার বলেন, সর্বস্তরে বাংলা ও প্রযুক্তিতে বাংলার ব্যবহার বাড়াতে এবং সমৃদ্ধ করতে ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহর থেকে বাংলায় এসএমএসের মূল্য ২৫ পয়সা করেছে সরকার। আমরা প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধিতে কয়েক বছর হতেই কাজ করছি। প্রযুক্তির এই সময়ে যদি ওয়েব প্ল্যাটফর্মে বাংলাকে সমৃদ্ধ করতে না পারি তাহলে পিছিয়ে যাব। একটা সময় যেখানে বাংলায় কোনো তথ্য সমৃদ্ধ লেখা বা কনটেন্ট ওয়েবে খুঁজতে গেলে ঘাম ছুটত, এখন আর তা হয় না।
টিএমজিবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের একটা আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা উচিত ছিল বাণিজ্য সংগঠন ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার। কিন্তু টিএমজিবি এটা আয়োজন করেছে। ইন্টারনেটে বাংলার ব্যবহার বাড়াতে এবং বাংলাকে আধিপত্যশীল ভাষা হিসেবে স্থান করে দিতে ১৬টি টুলস উন্নয়ন করছে সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলাকে স্বীকৃতি দেওয়ার কাজ সহজ হবে।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে ভাষার জন্য কোনো রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার নজির একমাত্র বাংলাদেশেরই আছে। তাই নিজের ভাষা নিয়ে কাজ করতে আমাদের আরো সক্রিয় হতে হবে। ওয়েবে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধিতে সরকার কাজ করছে। এ জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ থেকে প্রকল্প চলমান আছে।
এ ছাড়া মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলা বর্ণ এতদিন যে বৈষম্যের শিকার হয়েছে তা এবার একুশের রাত হতে অবসান হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তখনই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব, যখন বাংলায় আমাদের আরো কনটেন্ট সমৃদ্ধ করতে পারব। এটা শুধু ইউটিউব বা ফেইসবুকে নয়, এটা সবধরনের কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে করতে হবে।’দেশে ডটবাংলা ডোমেইন জনপ্রিয় না হওয়ার কারণগুলোও তুলে ধরেন মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, নিবন্ধন ফি আড়াই হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৮০০ টাকা করা হলেও অনেকেই আগ্রহ দেখাননি। এর অন্যতম কারণ, দেশে বাংলা কনটেন্টের অভাব। সঙ্গে যারা ওয়েবসাইট তৈরি করেন তারাও বাংলায় সেটি করতে আগ্রহী হন না।