কোটা আন্দোলনে শুরু থেকে সরব ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। রাস্তায় নেমে ছাত্রদের সমর্থন দিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। সেজন্য তাকে অনেক হুমকির মুখেও পড়তে হয়েছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি বাঁধন। রাস্তায় নেমে বলিষ্ঠ কণ্ঠে তাকে বক্তৃতা দিতেও দেখা যায়। কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সেই আন্দোলনে পরিচালক, শিল্পী, কলাকুশলীদের সঙ্গে রাস্তায় ছিলেন বাঁধন। কখনো ফার্মগেট, কখনো শাহবাগ, কখনো শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার সঙ্গে মিছিলে ছিলেন সরব ভুমিকায়।
তার কণ্ঠে ছিল সাহস। জীবনের ভয় তিনি পরোয়া করেননি। হুমকি পেয়েও তিনি মাঠে থেকেছেন সংগ্রামী হয়ে। সেই দিনগুলোতে যেভাবে তিনি ফেসবুক এবং মোবাইল ফোনে হুমকির শিকার হয়েছিলেন সেসব নিয়ে বাঁধন কথা বলেছেন সংবাদ মাধ্যমে।
বাঁধনের এখন চাওয়া নারীবান্ধব, বৈষম্যমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। যেখানে কোনো ধরনের দুর্নীতি থাকবে না, সুশাসন থাকবে, স্বাধীনতা, কথা বলার অধিকার থাকবে।
সংবাদ মাধ্যমকে বাঁধন বলেন, ‘আমি যেদিন থেকে ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনে মাঠে নামি, ওই দিন থেকেই আমাকে ফোনে, এসএমএসে, ফেসবুকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছিল। অ্যাসিডও মারতে চেয়েছিল তারা। আমি ভয় পাইনি। কারণ, একসঙ্গে আন্দোলনের দিনগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের চোখে-মুখে যে আগুন দেখেছি, আমি নিজেই তাদের কাছ থেকে সাহস সঞ্চার করেছি।’
শিক্ষার্থীদের সেই সমাবেশে মাইক ধরে কান্নারত অবস্থায় কথা বলেছিলেন বাঁধন। সে সময় তিনি বলেন, ‘আজ ওখানে আমার সন্তানও থাকতে পারতো। এভাবে শান্তিতে থাকা যায় না। এসব বন্ধ করতে হবে। আমরা সকলে এর বিচার চাই। আমরা রাষ্ট্রের বিচার চাই।’
এখন নতুন বাংলাদেশে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে আইনের অনেক কিছুরই পরিবর্তন করতে হবে। তা এই সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ কতটুকু করতে পারবে, জানি না। এ সরকারের কাছে চাওয়া একটা, গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র যেন পাই। যে দেশে সবাই হবে বাংলাদেশি। সব ধর্মের মানুষগুলোই সমানভাবে সমান অধিকার নিয়ে বাঁচবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রকাঠামোর যেসব জায়গায় পচন ধরেছে, সেগুলো এই সরকার সংস্কার করবে বলে প্রত্যাশা করি। এই অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন, তাদের অনেককে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, তারা সৎ মানুষ। আমি নিশ্চিত, তারা পারবেন। আরও আশাবাদী, আমাদের দুজন ছাত্র এই উপদেষ্টামণ্ডলীতে আছেন।’