শাবানা আজমি হিন্দি ছবির কিংবদন্তি অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে পাঁচটি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড তার ঝুলিতে। এটাই একটা রেকর্ড বলা যায়। তবে বলিউডে কাজ করতে গিয়ে তাকেও অপমানিত হতে হয়েছে। সেই অপমান এতটাই ছিল যে তিনি সেট ছেড়ে সোজা বাড়ি চলে যান, এবং ঠিক করেছিলেন তিনি বলিউডে কাজ করবেন না।
১৯৭৭ সালের কথা, শুটিং চলছিল ‘পারবারিশ’ ছবির। এই ছবির পরিচালক ছিলেন মনমোহন দেশাই। তার একটি গানের শুট চলছিল মুম্বাইয়ের স্টুডিওতে। ডান্স মাস্টার কমল নাচের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করছিলেন। দৃশ্যে ছিলেন শাবানা আজমি ও নিতু সিং। এরপরই শুরু হল সমস্যা।
সম্প্রতি একটি পডকাস্টে নিজের মুখেই সেই গল্প শোনালেন শাবানা আজমি। বলেন, ‘তখন ডান্স মাস্টার কমল স্যার নাচের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করছিলেন, আমি ভালো ডান্সার নই, বারবার অনুরোধ করেছিলাম কমল মাস্টারের যে একটু রিহারস্যাল হলে সুবিধা হয়। তবে তিনি জানান, হাততালি দেওয়া ছাড়া কিছু করার নেই।’
শাবানা বলেন, ‘যদিও এই নাচের দৃশ্যের শ্যুটের সময় আমার এক হাতে বন্দুক, অন্য হাত কোমরে ছিল। সেই অবস্থায় স্টেপ করতে হচ্ছে প্রতিটি বিটে। আমার খুব অসুবিধা হচ্ছিল, আমি খুব শান্তভাবে কমল মাস্টারকে অনুরোধ করলাম, এই স্টেপটা কি একটু পরিবর্তন করা যাবে? এরপরই দেখা গেল তিনি লাইট সাউন্ড বন্ধ করে, সবাইকে জড়ো করে বললেন, “দেখুন এখন শাবানা আজমি কমল মাস্টারকে বলে দেবেন কী স্টেপ হবে! দেখাও কী স্টেপ করতে হবে দেখাও!” ঘটনাচক্রে সেইদিন সেটে মনমহন দেশাই সেটে ছিলেন না। আমি কাঁদতে কাঁদতে যে কস্টিউম পড়ে ছিলাম সেই অবস্থায় খালি পায়ে হেঁটে বাড়ি পৌঁছাই। রাস্তা দিয়ে লোক দেখছে অঝরে কাঁদছি আমি, ছুটতে ছুটতে ওইরকম নাচের কস্টিউম পড়ে বাড়ি এসে, ঠিক করি আমি আর বলিউডে অভিনয় করবোনা। আমার এদের সঙ্গে কিছুই যায় আসেনা। আজও আমার ওই দিনটা স্পষ্ট মনে আছে।’
প্রসঙ্গত, ১৯৭৭ সালে এই ছবি মুক্তি পেলে সুপারহিট হয়। সেখানে মুখ্য চরিত্রে দেখা যায় অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খান্না, নিতা সিং, শাম্মি কাপুরকে।