দেশবরেণ্য লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পারিবারিক সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
গায়িকার ছেলে ইমাম জাফর নোমানী বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সামাজিকমাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছেন, ফরিদা পারভীনের চিকিৎসার জন্য আর্থিক বা অন্যকোনো ধরনের কোন সহযোগিতার প্রয়োজন নেই।
ওই পোস্টে ফরিদাপুত্র লিখেছেন, সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আম্মাকে (ফরিদা পারভীন) গত বুধবার বিকাল থেকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ওনার স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে এবং ব্লাডপ্রেশার নেই।
এরপর তিনি যোগ করেন, এখন ডাক্তাররা সর্বোচ্চমাত্রার ঔষধ দিয়ে কৃত্রিমভাবে তার ব্লাড প্রেশার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে এবং মেশিনের মাধ্যমে তার ফুসফুসটা চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এই পরিস্থিতিতে আম্মার শারীরিক অবস্থার উন্নতির আর তেমন কোনো আশা নেই। তারপরও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শে আমরা আরও কিছু সময় ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে এই লাইফ সাপোর্টটা চালিয়ে নিচ্ছি।
ফরিদাপুত্র আরও লিখেছেন, খুবই বেদনাদায়ক যে, আম্মার এই শেষ মুহুর্তেও কিছু অ-মানুষ এখনও নানা পরিচয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণামূলক কাজ করছে। এ ব্যাপারে আবারও সকলকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি। আমাদের পরিবারের সাথে সরকারের সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয় থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে। পরিবারের পক্ষ থেকে আবারও নিশ্চিত করছি যে, আম্মার চিকিৎসার জন্য আর্থিক বা অন্যকোনো ধরনের কোন সহযোগিতার প্রয়োজন নেই।
সবশেষে পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে দোয়ার অনুরোধ জানিয়েছে নোমানী লিখেছেন, সবাই আম্মার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ পাক তার অসীম দয়ায় আম্মার এই শেষ সময়কে সহজ ও শান্তিময় করুন। আমিন!
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত গেয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করেন ফরিদা পারভীন। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পান তিনি। পরে সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে লালনগীতির তালিম নেন এবং ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন লালনগীতির জীবন্ত কিংবদন্তি।
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে তিনি লাভ করেন একুশে পদক। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন ‘অচিন পাখি স্কুল’।