ভালো বন্ধু না থাকলে একা চলতে ভালো লাগে না বলে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান টুকু। তিনি বলেছেন, আমরা দুজন বাল্যকালের বন্ধু ছিলাম। মাহফুজ উল্লাহ চলে যাওয়ার পর থেকে আমি খুব একা হয়ে গেছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সকাল যখন হতো তখন দুজনেই কথা বলতাম। আমাদের কথার বিষয় ছিল বন্ধুদের আলোচনা না। আমাদের আলোচনা হতো দেশে কি হবে। আমার সঙ্গে ওর সবসময় মতের অমিল হতো। বেশিরভাগ সময়ই আমরা টেলিফোন রেখে দিতাম ঝগড়া করে। কিন্তু রাষ্ট্র নিয়েই আমরা আলোচনা করতাম।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর স্মরণ সভায় এ স্মৃতিচারণ করেন তিনি।
বন্ধুকে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, নিয়ম করে প্রতিদিন ফোন এলেও একদিন সকালে ফোন এলো না। পরে আমি ফোন করে তাকে বললাম, দোস্ত তুই যে ফোন করিস নাই। ও আমাকে বলল, শরীরটা ভালো নাই। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কি করবি আজকে। আমাকে বলল, আজকে ভালো লাগছে না। তখন আমি বললাম আজকে তোর ক্লাস নেওয়ার নাই? ও বলল আছে। কিন্তু আমি যাব না। আমি তখন বুঝতে পারলাম ওর শরীরটা একেবারেই ভালো নেই। আমি ওকে বললাম, তাহলে দোস্ত আমি আসি। ও আমাকে বলল, তুই এসে কি করবি। পরে অনেকটা অভিমান নিয়ে ফোনটা রেখে দিলাম। অভিমানের কারণে আমি আর যাইনি ওদিন। দুপুরে আলমগীর (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) ভাই বলল তুমি কোথায়। মাহফুজ উল্লাহ শরীর খুব খারাপ, তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো স্কয়ার হাসপাতালে। আমি বনানী থেকে দ্রুত এসে দেখলাম আইসিইউতে আমার বন্ধু। কথা বলতে পারছে না। কিন্তু আমাকে দেখে দুই চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে দিলে। আমি সেই দৃশ্য এখনও ভুলতে পারি না।
কথাগুলো বলতেই সবার সামনে কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে গেল ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর। চোখ দিয়ে গড়াল জল।
টুকু বলেন, ভালো বন্ধু না থাকলে একা চলতে ভাল লাগে না। বন্ধুকে অনেক মিস করি। একা বোধ করি। বন্ধু একুশে পদক পাওয়ায় আমরা সবাই একত্রিত হলাম। বন্ধুকে মনে করলাম। আল্লাহ যেন ওকে বেহেশত নসিব করেন।
স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, প্রয়াত মাহফুজ উল্লাহর বড় ভাই মাহবুব উল্লাহ, বিএনপি কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন মাহফুজ উল্লাহর স্ত্রী ও তিন সন্তান।