বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর ডেমরার সানারপাড়ে মিরাজ হোসেন ও মোহাম্মদপুরের বছিলায় বুড়িগঙ্গা ফিলিং স্টেশনের মেশিন অপারেটর মনসুর মিয়া নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১৪ জনের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) মিরাজ হোসেনকে হত্যার অভিযোগে ৯২ জনকে আসামি করে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালতে মামলা করেন বাদী খোরশেদ আলম মিয়া। আদালত ডেমরা থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এ মামলায় উল্লেখযোগ্য অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন–সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর-রশীদ।
অন্য মামালা ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে দায়ের করা হয়েছে। ২২ জনকে আসামি করে মামলাটির দায়ের করেন মনসুর মিয়ার ভাই আয়নাল হক। আদালত এই অভিযোগটি মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এই মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমিপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর-রশীদ।
মনসুর হত্যা মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকায় মাদ্রাসা থেকে সন্তানকে আনতে যাচ্ছিলেন মনসুর মিয়া। পথে পুলিশ ও র্যাবের গুলিতে বিদ্ধ হন তিনি। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মিরাজ হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন মিরাজ। ডেমরার সানারপাড় মেন রোডে এলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও র্যাবের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, পেশাজীবী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগের কয়েকশ’ সদস্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে ও আক্রমণ করে। তারা গুলি চালাতে থাকে। এতে মিরাজসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মিরাজকে মৃত ঘোষণা করেন।