বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনাদের খুব শিগগিরই ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সেনাদের খুব শিগগিরই ফেরানোর বিষয়ে কাজ চলছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে দিনক্ষণ প্রকাশ করতে পারছি না। রাখাইনের রাজধানী সিত্তে থেকে বাংলাদেশ কনসুলেটের কূটনীতিকদের সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
দিল্লী সফর নিয়ে কথা বলতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৬ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ভারত সফরে গিয়েছিলাম, এটি আমার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর, অত্যন্ত সফল একটি সফর হয়েছে। ভারতের রাষ্ট্রপতি, ভাইস প্রেসিডেন্টসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্তাব্যাক্তিদের সাথে বৈঠক হয়েছে। সকলেই প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে তার নেতৃত্বের প্রসংশা করেছেন। বিশেষ করে ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার ভূয়সী প্রসংশা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভারতের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশ সফরের আহ্বান জানিয়েছি। তাকে লিখিত আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হবে।
এসময় ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে বৈঠক প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা ভোগ্যপণ্যের জন্য ভারতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় ছয়টি পণ্যের জন্য বিশেষ কোটা রাখার বিষয়ে কথা হয়েছে। রমজানকে সামনে রেখে ২০ লাখ মেট্রিক টন পেয়াজ এবং ৫০ লাখ মেট্রিকটন চিনি আমদানীর বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে।
তিনি বলেন, ভারতে ভিসা কিভাবে আরও সহজ করা যায় সে বিষয়ে কথা হয়েছে। মিয়ানমারের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমাদের দেশে এই ইস্যুতে যে হুমকী বা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে একত্রে কাজ করার বিষয়ে কথা হয়েছে। ভারত সফরে মিয়ানমার সীমান্তে সংঘর্ষের ব্যাপারে যে আলোচনা হয়েছে তা হলো- সীমান্তে এমন সংঘাতে যেনো ননলিথাল অস্ত্র ব্যবহার হয় সে ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। তবে সেটি কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেটি পরে আলোচনা হবে।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে অনেক সমস্যা ইতিমধ্যে বাংলাদেশে আছে। আরও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া কি উচিত হবে! তাদের সংঘাতের কারণে আমরা সমস্যায় পড়বো সেটা কি সঙ্গত? বরং আপাতত মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানোই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আমাদের কনসার্ন জানানো হয়েছে। তাদের অভ্যন্তরীন গন্ডগোলে আমাদের সমস্যা হওয়া বা মানুষ নিহত হবার ব্যাপারে কড়া ভাষায় তাদের বলা হয়েছে।
এসময় বিএনপির বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি এখন পুরোনো গাড়ি। স্টার্ট দিয়ে কোনোরকমে চালু রাখার চেষ্টা করছে। যাতে তাদের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা থাকে। আশা করি বিএনপি গণতান্ত্রিক কার্যক্রমের মধ্যেই থাকবে। বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচী দিয়ে তাদের হতাশা কাটানোর চেষ্টা করছে। সরকারে থাকলে সমালোচনা হবেই। কিন্তু তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে অগ্নিসন্ত্রাস করতে দেয়া হবে না
ভূটানের রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠক প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ভূটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানীর ব্যাপারে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে কথা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতকে এগিয়ে নিতেও আলোচনা হয়েছে।