বিশব্যাপী দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে রাজধানী ঢাকা। শহরটির বায়ুমান স্কোর সবশেষ ২৩০ রেকর্ড করা হয়েছে; অর্থাৎ আজ খুবই অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস। অন্যদিকে দূষণের তালিকার শীর্ষ পাঁচে অবস্থান করছে প্রতিবেশী ভারতেরই তিন শহর, যার মধ্যে একেবারে শীর্ষে আছে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা। শহরটির সবশেষ রেকর্ডকৃত বায়ুমান স্কোর ৩৮০; অর্থাৎ দুর্যোগপূর্ণ।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার) সূচক থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
আইকিউএয়ার সূচক অনুযায়ী, দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় তৃতীয় নম্বরে রয়েছে ভারতের দিল্লি। শহরটির সবশেষ রেকর্ডকৃত দূষণ স্কোর ২২১; অর্থাৎ খুবই অস্বাস্থ্যকর ভারতের রাজধানীর বাতাস। তারপরই চতুর্থ নম্বরে অবস্থান করছে ভারতের মেগাসিটি মুম্বাই। শহরটির সবশেষ রেকর্ডকৃত বায়ুমান স্কোর ২১৭; অর্থাৎ এ শহরটির বাতাসও খুব অস্বাস্থ্যকর।
দূষণের তালিকায় শীর্ষ পাঁচের সবশেষ শহরটি উজবেকিস্তানের তাসখন্দ। শহরটির বায়ুমান স্কোর আজ ১৯০। এছাড়া বায়ুদূষণের শীর্ষ দশে আছে পাকিস্তানের দুই শহর লাহোর ও করাচি। ১৮২ ও ১৮১ স্কোর নিয়ে শহর দুটির অবস্থান যথাক্রমে ৭ ও ৯। ১৮৫ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ৬-এ অবস্থান করছে কুয়েত সিটি।
এছাড়া ১৮১ স্কোর নিয়ে বায়ুদূষণের তালিকায় অষ্টম অবস্থানে আছে বাহরাইনের মানামা। দশম অবস্থানে থাকা ঘানার আক্রার দূষণ স্কোর ১৭৪।
প্রসঙ্গত, কোন স্থানের বায়ুমান স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে সেখানকার বাতাসকে মান ভালো বলে বিবেচনা করা হয়। আর স্কোর যদি হয় ৫১ থেকে ১০০, তাহলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত স্কোরকে অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে সেই বাতাসকে বলা হয় খুবই অস্বাস্থ্যকর। আর কোন জায়গার বায়ুমান ৩০১-এর বেশি হলেই সেখানকার বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় ও বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়। ২০১৯ সালের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো—ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণাধীন এলাকার ধুলা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ুদূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু বায়ুদূষণের কারনেই প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায় বিশ্বব্যাপী।