পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকিতে নতুন ভারত ভয় পায় না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার দাবি, পারমাণবিক হুমকিতে নতুন ভারত ভীত নয়। কাশ্মিরের পেহেলগাম হামলার জবাবে পরিচালিত ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর প্রশংসা করতে গিয়েই তিনি এ কথা বলেন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
মোদি দাবি করেন, পাকিস্তান ও পাকিস্তানশাসিত কাশ্মিরে অবস্থিত এই অভিযানে ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম)। এর মাধ্যমে ইসলামাবাদের সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের ধার জেলায় নিজের ৭৫তম জন্মদিনে এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদি এ মন্তব্য করেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি একাধিক প্রকল্প উদ্বোধন করেন। মোদি বলেন, “এটা নতুন ভারত। কাউকে ভয় পায় না। ভারতীয় সেনারা শত্রুর ঘরে ঢুকে আঘাত হানতে পারে। নতুন ভারত পারমাণবিক হুমকিতেও ভয় পায় না।”
এ সময় তিনি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করেন। মুনির হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, যদি ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে পাকিস্তান অস্তিত্ব সংকটে পড়ে, তবে তারা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে এবং ‘বিশ্বের অর্ধেককে ধ্বংস করবে’। মোদি বলেন, “অপারেশন সিন্দুরে আমরা জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাড গুঁড়িয়ে দিয়েছি। জইশের জঙ্গিরাই পাকিস্তানকে উন্মোচিত করেছে।”
এদিন মোদি ভারতের প্রথম ‘প্রধানমন্ত্রী মেগা ইন্টিগ্রেটেড টেক্সটাইল রিজন অ্যান্ড অ্যাপারেল (পিএম মিত্রা) পার্ক’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তিনি একইসঙ্গে ‘স্বাস্থ্য নারী, শক্তিশালী পরিবার’ ও ‘জাতীয় পুষ্টি মাস’ কর্মসূচিও উদ্বোধন করেন।
সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, পিএম মিত্রা প্রকল্পের আওতায় মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, গুজরাট, কর্ণাটক, উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে বিশ্বমানের অবকাঠামোসহ সাতটি বৃহৎ টেক্সটাইল উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। ধার জেলার ভৈনসোলা গ্রামে প্রায় ২ হাজার ১৫৮ একর জায়গায় তৈরি হওয়া এই টেক্সটাইল পার্ক তুলা উৎপাদকদের বিশেষভাবে উপকৃত করবে।
‘স্বাস্থ্য নারী, শক্তিশালী পরিবার’ কর্মসূচি আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে আয়ুষ্মান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এতে নারীদের স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে— বিশেষত মানসিক স্বাস্থ্য, লিঙ্গসমতা, কিশোরী অ্যানিমিয়া নিয়ন্ত্রণ ও সক্রিয় জীবনধারায় জোর দেওয়া হবে।
এনডিটিভি বলছে, নিজের জন্মদিনে মধ্যপ্রদেশে এটা মোদির দ্বিতীয় সফর। এর আগে ২০২২ সালেও তিনি নিজের জন্মদিনে রাজ্যটিতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “ভারতের কোটি কোটি মা-বোন আমাকে আশীর্বাদ করছেন। ধারেই দেশের সবচেয়ে বড় টেক্সটাইল পার্ক শিল্পে নতুন গতি আনবে এবং কৃষকের উৎপাদিত ফসলের যথাযথ মূল্য নিশ্চিত করবে।”
মোদি এ দিন ঐতিহাসিক দিকও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “১৯৪৮ সালের এই দিনে সরদার প্যাটেলের দৃঢ় নেতৃত্বে ভারতীয় সেনারা হায়দরাবাদ মুক্ত করেছিল এবং ভারতের মর্যাদা ফিরিয়ে এনেছিল।” প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন নিজামশাসিত হায়দরাবাদ রাজ্য ভারতীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়।