দেশের গৃহহীন মানুষের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় উপহার দেওয়া ঘর নির্মাণে দুর্নীতি বা অনিয়ম এবং সেগুলো ভাঙার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দুর্নীতি দমন কমিশনকে বলবো, যে ৩০০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রত্যেকটির তদন্ত তাদের করতে হবে এবং রিপোর্ট দিতে হবে। এটাই আমার কথা।’
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের ১৪তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বলতে গেলে ১৯৯৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত কম করে হলেও ১০ লাখ মানুষকে আমি ঘর তৈরি করে দিয়েছি। এবার যে ঘটনাটি ঘটেছে, এখানে একজন মাননীয় সংসদ সদস্য প্রশ্ন তুলেছেন, আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এটা আমরা তদন্ত করছি।’
তিনি বলেন, ‘নয়টি জায়গায় দুর্নীতি পেয়েছি। ১০-১২টি জায়গায় অতিবৃষ্টি হলো, সেই বৃষ্টির কারণে মাটি ধসে ঘর পড়ে গেছে। সেখানে কিন্তু আরও অনেক ঘর ছিল। ৩০০টি জায়গায় যেখানে প্রত্যেকটি ঘরের ছবি আমার কাছে আছে। পুরো বিষয় তদন্ত করে দেখা গেছে, সেখানে দরজা-জানালায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে ফ্লোরগুলো খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তোলা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আগামীতে সংসদে ওই ছবিও দেখাবো। এটা তো দুর্নীতির জন্য হয়নি। এটা কারা করলো? তবে হ্যাঁ, কারা করেছে, সেটা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। কিছু গ্রেফতার হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতার করা হবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘একজন মাননীয় সংসদ সদস্য বললেন, দুর্নীতি দমন কমিশন নাকি বলছে, আমরা আর তদন্ত করবো কী? প্রধানমন্ত্রী তো এ নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু যারা ভেঙেছে, তাদের নিশ্চয়ই কোনো উদ্দেশ্য ছিল। এখানে দুর্নীতি দমন কমিশনের এ কথা বলার কথা তো নয়। এ কথা যে কর্মকর্তা বলেছেন, যদি আমি জানতে পারি তাহলে তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘আমার প্রশ্ন দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত বন্ধ করবে কেন? তাদের তো তদন্ত বন্ধ করার কথা নয়। তাদের তো তদন্ত চালু রাখতে হবে, তদন্ত করে দেখতে হবে। সেগুলো কারা ভাঙলো? তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল? তারা কেন ভাঙলো? সেটা যদি দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে, তাহলে তদন্ত করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা গরিবদের ঘর করে দেব, সেখান থেকেও টাকা মেরে খাবে? আমরা এখন কংক্রিট এবং স্টিল দিয়ে ঘর করে দিচ্ছি। যাতে সহজে কেউ ভাঙতে না পারে।’