প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদেশের জনশক্তি ওমান এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। এ মানব সম্পদ থেকে দুই দেশই উপকৃত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার বিন আবদুল করিম আল-বালুশী। এসময় প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করে ওমানের রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার বলেন, এটা সত্য এবং তারা দুই দেশের অর্থনীতির জন্যই কাজ করছেন।

পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান।

বৈঠকে ওমানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ওমান দীর্ঘ সময় ধরে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখছে এবং আগামীতে প্রবৃদ্ধি দ্বিগুণ অঙ্কে পৌঁছাতে পারে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে জানান প্রেস সচিব।

সার আমদানির বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, সরকারের সঙ্গে সরকার (জিটুজি) চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এ প্রস্তাব যাচাই করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রদূত বলেন, স্বল্পোন্নত থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হলে ভালো হবে।

প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রদূত উভয়েই এলডিসি-পরবর্তী সময়ের জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে পরিপূরক করতে ওমানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে সমর্থন করার বিষয়েও আলোচনা করেন।

বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি জনশক্তি ওমানের শ্রমবাজারে কাজ করছেন। এটি বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য নয়, আমরা শ্রমের চাহিদা নির্দেশ করার জন্য, পর্যায়ক্রমে শ্রমবাজার পর্যালোচনা করা হয়। সেই পর্যালোচনার ভিত্তিতে, কখনও কখনও আমরা প্রায়শই এমন দেশগুলোতে স্থগিতাদেশ দিয়ে থাকি। যেখানে অতিরিক্ত সংখ্যক জনশক্তি রয়েছে। সাসপেনশন সহজ করার জন্য আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। পরবর্তী পর্যালোচনা, তিনি যোগ করেছেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বিধিনিষেধের উপায় দেখে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের ওপর কম্বল ভিসা সীমাবদ্ধতা প্রয়োগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, কিন্তু আসলে এমনটা ছিল না। জনবল ভিসা ছাড়া বাকি সব ভিসা যেমন ফ্যামিলি ভিসা এবং ট্যুরিস্ট ভিসা খোলা আছে। আর বাংলাদেশিদের জন্য দশটি ক্যাটাগরির ওমানের ভিসা এখন উন্মুক্ত।

এ প্রসঙ্গে-রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তার সরকারের কাছে একটি অনুরোধপত্র পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি তাকে বাংলাদেশের পক্ষে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে সহজ করবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছি যাতে, শিগগিরই ওয়ার্কিং ভিসা প্রদান শুরু হতে পারে।

ওমানের রাষ্ট্রদূত শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য তাকে অভিনন্দন জানান।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নতি হবে। এটা ভালো হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অবশ্যই আপনার দিকে তাকিয়ে আছেন এবং তিনি অবশ্যই আপনাকে নিয়ে গর্বিত হবেন।

ওমানের রাষ্ট্রদূতও প্রধানমন্ত্রীকে একটি ওমানির ঐতিহ্যবাহী নৌকার রেপ্লিকা উপহার দেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।