আনতারা রাইসা: করোনার এই কঠিন সময়ে আমরা সকলেই ঘরে বসে থেকে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। কেউ কেউ আমরা মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। ফেসবুক কিংবা টেলিভিশন খুললেই এখন শুধু মানুষের মৃত্যুর মিছিল দেখে আপনি নিশ্চয়ই খুব হতাশ হয়ে পরেছেন? এজন্যই এখন দরকার একটু ভিন্ন ধারার সংবাদ। ঘরে বসে আপনি বিভিন্ন তারকাদের মজার মজার গল্প শুনে নিজের চিন্তাকে একটু ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে পারেন। এতে করে আপনার মন ও ভালো থাকবে।
বিনোদন জগতের বাইরের খবর তো আমরা সবাই জানি। কখন কোন ছবি মুক্তি পাচ্ছে , কোন অভিনেতার কোন অভিনেত্রির সাথে প্রেমের গুঞ্জন চলছে। কিন্তু এর ভিতরেও কিন্তু আরো অনেক ধরণের ঘটনা ঘটে থাকে। যা হয়তো ওই ভাবে মিডিয়াতে আসেনা। এবার সেই গল্পগুলোই আপনাদের শোনাব।
বাজিগর-এ শাহরুখের সঙ্গে কাজই করতে চাননি শ্রীদেবী-
শাহরুখ খানকে এখন বলিউডের বাদশাহ বলা হয়। কিন্তু ২৫ বছর আগে ব্যাপারটা এমন ছিলনা। তখন বলিউডের বক্স অফিসে বাজিমাত করে শাহরুখের বাজিগর ছবিটি। সেই থেকে শাহরুখ-কাজল জুটি হয়ে যায় সবার প্রিয়।
এই ছবির কাস্টিং নিয়ে একটা মজার গল্প আছে। পরিচালক আব্বাস-মস্তান প্রথমে নাকি নায়িকার ভূমিকায় শ্রীদেবীকেই ভেবেছিলেন। শ্রীদেবী সে সময় বলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রী। পরিচালক আব্বাস-মস্তান যখন শ্রীদেবীর কাছে এই ফিল্মের অফার নিয়ে যান, স্ক্রিপ্ট শুনেই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল শ্রীদেবীর। কিন্তু তাঁর প্রথম অপছন্দ ছিলেন শাহরুখ খান। শ্রীদেবী সাফ জানিয়ে দেন, কোনও আনকোরা জুনিয়র অভিনেতার সঙ্গে তিনি অভিনয় করতে পারবেন না।
তাঁকে যদি ফিল্মে নিতেই হয়, তা হলে কোনও জনপ্রিয় হিরো নিতে হবে। পরিচালকদের নাকি এমনই শর্ত দিয়ে বসেছিলেন শ্রীদেবী। পরিচালক আব্বাস-মস্তান তাঁকে জানিয়েছিলেন যে, এর আগে সলমন খান, আমির খান এবং অনিল কপূরের কাছে তাঁরা প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন।
কিন্তু এই ফিল্মে নায়কের চরিত্র নেগেটিভ হওয়ায় তাঁরা কেউই এই প্রস্তাবে রাজি হননি। একমাত্র শাহরুখ খান প্রস্তাব ফিরিয়ে দেননি। কিন্তু কোনও কিছুর বিনিময়েই শ্রীদেবী এই ফিল্মে শাহরুখের রিপরীতে অভিনয়ে রাজি হননি। প্রথমে ঠিক ছিল, শ্রীদেবী যৌথ ভূমিকায় অভিনয় করবেন। অর্থাত্ প্রিয়া চোপড়া এবং সীমা চোপড়া— এই দুই বোনই হবেন তিনি। কিন্তু উপায় না দেখে বাধ্য হয়ে পরিচালককে স্ক্রিপ্টে কিছুটা বদল আনতে হয়। শাহরুখের বিপরীতে মুখ্য চরিত্রে কাজল এবং অন্য চরিত্রে শিল্পাকে নেওয়া হয়।
এই ফিল্ম দিয়েই বলিউডে পা রাখেন শিল্পা শেট্টি।
মিঠুন ও শক্তি কাপুরঃ
ডিস্কো সেনসেশন মিঠুন এবং সেক্সি ভিলেন শক্তি কপূর দু’জনে একসঙ্গে ৫২টি ফিল্মে অভিনয় করেছেন। তাঁদের একসঙ্গে প্রথম ফিল্ম ছিল ‘লাপারবা’। শক্তি কপূরের পুরো নাম সুনীল সিকান্দরলাল কপূর। রিল লাইফে বেশির ভাগ সময় ভিলেনের অভিনয়ই করেছেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি একেবারে উল্টো স্বভাবের মানুষ তিনি।মিঠুন আর শক্তি কপূরের পরিচয় কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে আসার অনেক আগে থেকেই। পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া-তে পড়ার সময় থেকে।
মিঠুন চক্রবর্তী এবং শক্তি কপূরের বন্ধুত্ব অনেক দিনের। সেই ১৯৭৩ সাল থেকে বন্ধুত্বের সূত্রপাত। তা এখনও একই রকম রয়ে গিয়েছে। ভিলেন-হিরোর এই বন্ধুত্ব কী ভাবে হল, তা নিয়ে মজার একটা ঘটনা রয়েছে। মিঠুন কলেজে শক্তি কপূরের সিনিয়র ছিলেন। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ওই কলেজের ছাত্র ছিলেন মিঠুন। তার পর ওই কলেজেই শিক্ষকতা করতেন এবং কলেজ হস্টেলে থাকতেন।
শক্তি কপূরের প্রথম দিন ছিল কলেজে। মিঠুন ছিলেন তাঁর থেকে এক বছরের সিনিয়র। কলেজের প্রথম দিন বলে কথা, খুব স্টাইলে কলেজে ঢোকেন শক্তি। প্রথম যাঁর মুখোমুখি তিনি হয়েছিলেন, তিনি ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। এক সাক্ষাত্কারে শক্তি কপূর জানিয়েছিলেন, হস্টেল রুমের বাইরে ছেঁড়া লুঙ্গি পরে দাঁড়িয়েছিলেন মিঠুন। তাঁর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মিঠুন চক্রবর্তীকে মদের বোতল দেখিয়ে খাওয়ার প্রস্তাব দেন শক্তি। তার পর কী হয়েছিল?
শক্তি কপূরের চুল ধরে টেনে হস্টেলের ভিতরে নিয়ে যান মিঠুন। আরও অনেক সিনিয়র মিলে তাঁকে রীতিমতো র্যাগিং করেন। অন্ধকার ঘরে মেঝেতে বসিয়ে রাখা হয় তাঁকে। ছোট এবং অসমান করে কেটে দেওয়া হয় শক্তির চুল।
তার পর অবশ্য মিঠুনই এগিয়ে গিয়েছিলেন শক্তি কপূরের কাছে। শক্তি কপূরও তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। দু’জনে সেই থেকেই খুব ভাল বন্ধু হয়ে যান। সেই বন্ধুত্ব আজও অটুট।
নিউজ ডেস্ক/বিজয় টিভি