শ্বেতাঙ্গ পুলিশকর্মীর হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার ঘটনায় উত্তাল আমেরিকা। সেই রেশ কাটার আগেই ফের পুলিশের হাতে খুন হলেন আর এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি। শুক্রবার আটলান্টায় গ্রেফতারের সময়ে পালানোর চেষ্টা করলে রেশার্ড ব্রুকস নামে ওই ব্যক্তির উপরে গুলি চালিয়ে দেন এক পুলিশকর্মী।
ফ্লয়েডের মৃত্যুর পরে শুরু হওয়া ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনে নতুন করে আগুন জ্বালাল ব্রুকসের হত্যা। ঘটনার পরেই ইস্তফা দিয়েছেন আটলান্টার পুলিশ-প্রধান এরিকা শিল্ডস। অন্তর্বর্তী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রডনি ব্রায়ান্ট। শনিবার আটলান্টা পুলিশের মুখপাত্র কার্লোস ক্যাম্পোস জানান, অভিযুক্ত দুই পুলিশকর্মী বরখাস্ত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ওয়েন্ডিজ় নামে একটি রেস্তরাঁর সামনের রাস্তা আটকে দাঁড়িয়েছিল ব্রুকসের গাড়ি। সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বছর সাতাশের ব্রুকস। রেস্তরাঁয় আসা অন্যদের গাড়ি নিয়ে ঢুকতে অসুবিধা হচ্ছিল বলে পুলিশকে অভিযোগ জানান রেস্তরাঁকর্মীরা। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশের একটি দল। পরীক্ষায় ধরা পড়ে, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন ব্রুকস। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করলে পুলিশের হাত ছাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্রুকস। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। টেজ়ার গানের সাহায্যে তাঁকে অবশ করার চেষ্টা করে পুলিশ। সেটি কেড়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ব্রুকস। তাড়া করে পুলিশও। হঠাৎই পুলিশের দিকে টেজ়ার তাক করেন ব্রুকস। এর পরেই ব্রুকসকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ব্রুকস। ধস্তাধস্তিতে আহত হন এক পুলিশকর্মীও। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি ব্রুকসকে। তবে আহত পুলিশকর্মীকে প্রাথমিক শুশ্রূষার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জর্জিয়া বুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ডিরেক্টর ভিক রেনল্ডস জানিয়েছেন, ওয়েন্ডিজ়ের সামনে নজরদারি ভিডিয়ো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর সমালোচনায় সরব হয়েছেন আটলান্টার মেয়র কেশা ল্যান্স বটমস। আগ্নেয়াস্ত্রের অপপ্রয়োগ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মেয়র।
ব্রুকসের মৃত্যুর পরে দক্ষিণ-পূর্ব আটলান্টার বিভিন্ন রাস্তায় জমায়েত করেন প্রতিবাদীরা। শনিবার রাতে বহু গাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের উপরে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। দু’পক্ষের খণ্ডযুদ্ধও বেধে যায়। ঘটনার সূত্রপাত যে ওয়েন্ডিজ় রেস্তরাঁয়, তার সামনেও অবরোধ করেন প্রতিবাদীরা। ভেঙে দেওয়া হয় রেস্তরাঁর জানলা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ভবনটির একাংশে। বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে আমেরিকায় এই আন্দোলন নিয়ে রবিবার মুখ খুলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি জানান, যা ঘটছে তা গভীর সমস্যার ইঙ্গিত। যার শিকড় রয়েছে অনেক গভীরে। সূত্র: আনন্দবাজার