১৯৫৯ সালের ২৯ জুলাই বুম্বাইয়ের বিখ্যাত ফিল্মি পরিবারে জন্ম তাঁর। বাবা সুপার স্টার সুনীল দত্ত ও মা বলিউড ইতিহসের ক্লাসিক অভিনেত্রী নার্গিস দত্ত। তিনি সঞ্জয় বালরাজ দত্ত। সবাই যাকে চেনে সঞ্জয় দত্ত নামে।
ছোট বেলা থেকেই ডানপিটে ছিলেন সাঞ্জু বাবা। ছোট বেলাই তাই বডিং স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে। দুরন্ত সঞ্জয় ছুটিতে বাড়ি ফিরেই বাবা মা কে প্রশ্ন করতেন ‘কেন তাঁর সব কাজে বাঁধা দেই স্কুল করতিপক্ষ’?
বাবার প্রযোজিত সিনেমা ‘ রেশমা অউর সেহরাহ ’-তে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে মাত্র বার বছর বয়সে প্রথম বারের মতো পর্দায় হাজির হন সঞ্জয়। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খান্না, ওয়াহিদা রাহমানের মতো সুপার স্টার অভিনয় শিল্পীরা। ছোট্ট সঞ্জয় সেখানে অভিনয় করেন কাওয়ালি শিল্পীর ভুমিকায়।
১৯৮১ সালে বাবা সুনীল দত্তের হাত ধরে ‘রকি’ সিনেমার মধ্যে দিয়ে বলিউডের প্রথম বডি বিল্ডার হিরো হিসেবে অভিষেক হয় সঞ্জয় দত্তের। চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। কিন্তু সঞ্জয়ের জীবন থেকে বিদায় নেন তাঁর মা নার্গিস দত্ত। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার মাত্র এক সপ্তাহ আগে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যু হয় নার্গিস দত্তের।
১৯৮২ সালের বছরের সবচেয়ে ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র বিধাতা ও ১৯৮৩ সালে ম্যাঁ আওয়ারা হুঁ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আশির দশকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠেন সঞ্জয়।
তারপর সঞ্জয়ের জীবনের সঙ্গে জড়াতে থাকে নানা বিতর্ক। ড্রাগ আডেক্টেড হয়ে যান সঞ্জয়। যুক্তরাষ্ট্রের রিহ্যাবে চিকিৎসা চলে তাঁর। সেখান থেকে ফিরে এসে আবার বলিউডে ফেরেন সঞ্জয়। ১৯৯৩ সালে মুম্বায়ের সিরিয়াল বম্ব ব্লাস্টের কেসে ফেসে যান সঞ্জয়। তাঁর বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেন তিনি।
দীর্ঘ দিন কারাগারে থাকার পর আবার ফিরে আসেন পর্দায়। সঞ্জয় দত্তের ব্যক্তি জীবন সিনেমার মতোই রহস্যে ভরা। কোন এক জ্যোতিষ তাঁর হাত দেখে বলেছিলেন ‘ পূর্ব জন্মে তুমি একজন অত্যাচারী রাজা ছিলে তারই শাস্তি স্বরূপ এই জনমে তোমাকে কারাগারে যেতে হবে’।
জীবনের অনেক চড়াই উৎরায় দেখেছেন বলিউডের এই সুপার স্টার। নায়ক হয়েও বলিপাড়ার খলনায়ক তিনি। ২০০৩ সালে মুন্না ভাই এম বি বি এস সিনেমার মধ্যদিয়ে আবার নিজেকে নায়ক প্রমাণ করেন তিনি। তারপর লাগে রাহ মুন্না ভাই, পরিণীতা, সন অব সরদার সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
চমক দেখিয়েছেন ২০১৮ সালে রাজকুমার হিরানি নির্মিত সঞ্জয়ের নিজের জীবনী নিয়ে নির্মিত সিনেমা সাঞ্জুতে নিজেরই অভিনয় করে। ২০১৯ সালে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত ঐতিহাসিক ছবি পানিপথ।
বলিউডের আলোর ঝলকানি থেকে শুরু করে রিহ্যাবের চিকিৎসা আর কারাগারের অন্ধকার, ৬০ বছরের জীবনে সবই দেখেছেন সঞ্জয়। আজ এই সুপার স্টারের ৬১ তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা।
নিউজ ডেস্ক/বিজয় টিভি