রোববার লুকাশেঙ্কো একটি জনসভা করেন। সেখানে বিরোধীদের আবার ভোট করার দাবি তিনি খারিজ করে দিয়েছেন। উল্টে অভিযোগ করেছেন ন্যাটোর বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, ”ন্যাটো রেলারুশের সীমান্তে কামান ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে।”
বেলারুশের ৬৫ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ”আমাকে রক্ষা করার দরকার নেই। আপনারা দেশকে রক্ষা করুন।” প্রেসিডেন্টের জনসভায় ছিলেন হাজার পাঁচেক মানুষ। তিনি যখন দেশরক্ষার আহ্বান জানাচ্ছেন, তখন বেলারুশের বিভিন্ন শহরে লাখো লোক রাস্তায় নেমেছেন তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানোর দাবিতে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী শ্বেতলানা এখন লিথুয়ানিয়াতে আছেন। তাঁর দাবি, আবার ভোটগণনা করতে হবে। আর ক্ষমতার হস্তান্তরের জন্য একটা জাতীয় পরিষদ গঠন করতে হবে।
ন্যাটো জানিয়েছে, তারা বেলারুশের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে, কিন্তু তারা পূর্ব ইউরোপে নতুন করে সামরিক উপস্থিতি বাড়ায়নি। ন্যাটোর মুখপাত্র জানিয়েছেন, পূর্ব ইউরোপে জোটের যে বহুজাতিক উপস্থিতি আছে, তা কাউকে বিপদে ফেলার বা ভয় দেখানোর জন্য নয়। ওটা আত্মরক্ষার জন্য এবং কেউ যাতে শান্তি ভঙ্গ করতে না পারে এবং কোনো বিরোধ যাতে না হয় তার জন্য।
প্রায় আটদিন হয়ে গেল বেলারুশ বিক্ষোভে উত্তাল। লুকাশেঙ্কো জয়ের দাবি করার পর থেকেই তাঁর বিরোধীরা রাস্তায় নেমেছেন। দুই জন প্রতিবাদকারী মারা গেছেন। কয়েক হাজার প্রতিবাদকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দশ দিন আটক করে রাখার পর বেলারুশে ডিডাব্লিউ-র সাংবাদিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
গত ২৬ বছর ধরে বেলারুশ শাসন করছেন লুকাশেঙ্কো। তাঁর দাবি, নির্বাচনে কোনো কারচুপি হয়নি। বিদেশি শক্তিগুলি এখন হস্তক্ষেপ করে ঝামেলা পাকাচ্ছে। লুকাশেঙ্কো বলেছেন, ”আমরা যদি তাঁদের কাছে নতিস্বীকার করি তাহলে আমাদের স্বাধীনতা বলে কিছু থাকবে না। আলাদা রাষ্ট্র হিসাবে আমাদের অস্তিত্ব লোপ পাবে। আমাদের মাতৃভূমি সংকটে।”
প্রেসিডেন্ট এই কথা বলছেন, আর সামনে সমবেত শ্রোতারা জাতীয় পতাকা আন্দোলিত করতে করতে স্লোগান দিয়েছেন, ‘আমরা এক’। প্রেসিডেন্টের এক সমর্থক রয়টার্সকে বলেছেন, ”আমি লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে আছি। আমি বুঝতে পারছি না, কেন তাঁর বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ হচ্ছে। আমরা তো তাঁর জন্য পেনশন ও বেতন সময়ে পাচ্ছি।”
বিরোধীরা স্বাধীনতার জন্য মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন। সেই মিছিলেই যোগ দেন লাখো লোক। রাজধানী মিনস্কেই এক লাখের বেশি লোক মিছিলে ছিলেন। তাঁরা হাতে ফুল ও বেলুন নিয়েছিলেন। অধিকাংশই পরেছিলেন সাদা পোশাক। বেলারুশে সাদাই হলো বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদের রং। অনেকের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা, ‘আমরা হিংসার বিরুদ্ধে’, ‘নির্যাতন ও মৃত্যু নিয়ে লুকাশেঙ্কোকে জবাব দিতে হবে’। অন্য ছোট বড় শহরেও বিশাল মিছিল হয়েছে। সূত্র: ডয়েচে ভেলে