দেড় দশকে অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখানো শেখ হাসিনা টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকারপ্রধান হওয়ার অনন্য নজির গড়তে চলেছেন।
রোববার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ; ভোটের প্রচারে দলের প্রধান শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার গুরুত্বের কথাই বলে আসছিলেন দলটির নেতারা।
এবারের ভোটে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২২৪টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। একাদশ সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে পেছনে ফেলে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ৬২ জন। আর জাতীয় পার্টির আসন অর্ধেকের চেয়ে বেশি কমে নেমেছে ১১টিতে। দুটিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি এবং একটিতে জয় পেয়েছে কল্যাণ পার্টি। একটি আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির শক্ত অবস্থান আরও পোক্ত হল। শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বকে ‘হার্ড পাওয়ার’ হিসেবে বর্ণনা করেছে টাইম ম্যাগাজিন, আর বিবিসির ভাষায় সেটা ‘ওয়ান উইমেন শো’।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে নিহত হওয়ার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথম সরকার গঠন করেন তার মেয়ে শেখ হাসিনা।
তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে হারতে হয় তাকে, যার পেছনে বিদেশের ষড়যন্ত্র ছিল বলে তিনি নিজেই বিভিন্ন সময় বলে আসছেন।
এরপর ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নতুন ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয় তাকে; রাজনীতি থেকে তাকে বাদ দেওয়ার সেই চেষ্টার মধ্য দিয়ে দৃশ্যত আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠেন তিনি।
এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনা যখন দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন, তখন বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ এর কাছাকাছি, ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে সেই প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ ছুঁই ছুঁই।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তিতে ২০২১ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১০ এর ঘরে নেওয়ার কথা সে সময় বলেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা লাগে অর্থনীতিতে।
মহামারীর খাড়া সামলানোর মধ্যে দুই বছর পর অর্থনীতির ‘বোঝার উপর শাকের আঁটি’ হিসাবে আবির্ভূত হয় রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ।
চতুর্থবার ক্ষমতায় এসে শুরুতেই লেনদেনে ভারসাম্য এনে ডলার বাজারে স্বাভাবিক করার চ্যালেঞ্জ থাকছে শেখ হাসিনার সামনে।