সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পূর্ব মুহূর্তে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৮ দিন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকার পর অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ভোলার দিনমজুর মো. হাসান (৩২)। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত পৌনে ১২টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
নিহত হাসান ভোলার লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের রাঁয়চাদ গ্রামের মো. কবির ও ইয়ানুর বেগম দম্পতির বড় ছেলে। মৃত্যুকালে হাসান হাবিব ও হাসিব নামে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে গেছেন।
গুলিতে নিহত হাসানের বাবা দিনমজুর মো. কবির বলেন, মোর পোলারে পুলিশ গুল্লি কইরা মারছে। মোর পোলা হত্যার বিচার চাই। মুই মামলা করমু। বলেই কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি।
নিহত হাসানের মামা মো. ছালাউদ্দিন জানিয়েছেন, প্রায় ১০ বছর ধরে হাসান ঢাকায় ছিল। যাত্রাবাড়ীতে একটি ফলের দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করত এবং সেখানেই একটি ভাড়া বাসায় ২ ছেলে ও সন্তান নিয়ে বসবাস করত।
তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে লং মার্চে যোগ দেয় হাসান। দুপুর ২টার দিকে মিছিলটি যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গেলে পুলিশ গুলি ছুড়তে থাকে এবং থানার পাশেই আমার ভাগিনা হাসান গুলিবিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয়রা হাসানকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখি হাসানের দুই কাঁধ ও বুকের আশেপাশে ৭টা গুলি লেগেছে। ঢাকা মেডিকেলেই গত ১৮ দিন হাসানের চিকিৎসা চলছিল। শেষ মেষ গতকাল ২৩ আগস্ট রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসান মারা যায়।
আড়ও পড়ুন: বিডিআর বিদ্রোহ: শেখ হাসিনা-আজিজসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এদিকে শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে হাসানের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। বিকেল ৫টায় জাতীয় শহীদ মিনারে হাসানের প্রথম দফা জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হবে এবং লালমোহনে পারিবারিক কবরস্থানে হাসানকে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ফেসবুকে দেখেছি লালমোহনের হাসান নামের গুলিবিদ্ধ এক যুবক ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন গত রাতে মারা গেছে। তবে এখনো অফিশিয়ালি কোনো তথ্য পাইনি।