ভারতের হায়দরাবাদের আল্লু অর্জুনের ‘পুষ্পা টু’র প্রিমিয়ারে ভক্তদের হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মারা যান ৩৯ বছরের নারী রেবতি ও তার ছেলে তেজা। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে রেবতিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। অন্যদিকে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তার ৮ বছরের ছেলেকে।
এ ঘটনায় গত ১৩ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় আল্লু অর্জুনকে। এর এক দিন পর জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি। কিন্তু জামিন পেলেও আরও এক বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন আল্লু অর্জুন।
শোনা যাচ্ছে, সিনেমার প্রিমিয়ারে ভক্তদের হুড়োহুড়িতে আহত শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক, লড়ছে মৃত্যুর সঙ্গে। আর এসব কিছুর জন্য আল্লু অর্জুনের দিকেই আঙুল তুলছে প্রশাসন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শিশু তেজাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। অক্সিজেন এবং প্রেসার সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন জানিয়েছে, থিয়েটারে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও নায়কের আচরণের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। তার দলকে জনসমাগমের বিষয়ে সতর্ক করা হলেও তারা সঠিকভাবে কাজ করেনি এবং অভিনেতা দুই ঘণ্টারও বেশি সময় থিয়েটারের ভেতরে ছিলেন।
এদিকে গেল ১৭ ডিসেম্বর সেই শিশুকে দেখতে হাসপাতালে যান হায়দরাবাদ সিটির পুলিশ কমিশনার সি ভি আনন্দ। সঙ্গে গিয়েছিলেন তেলঙ্গনা সরকারের স্বাস্থ্যসচিব ডা. ক্রিস্টিনা। তেজার শারীরিক অবস্থার এমন কথা শুনে দুঃখ প্রকাশ করেন আল্লু অর্জুনও।
এক পোস্টে অভিনেতা লেখেন, সন্ধ্যা থিয়েটারের মর্মান্তিক ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই কঠিন সময়ে পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা রইল। আমি তাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, তারা এই সময় একা নন। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করব।
গত ৪ ডিসেম্বর রাতে হায়দরাবাদের সন্ধ্যা সিনেমা হলে ‘পুষ্পা টু’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এতে আল্লু অর্জুন উপস্থিত থাকার খবর ছড়িয়ে পড়লে উপচে পড়েন তার ভক্তরা। শত শত দর্শক ভিড় জমান সিনেমা হলের প্রধান ফটকে। ফলে অনেক মানুষ পদদলিত হন। এ ঘটনায় মারা যান রেবতি।
এ ঘটনায় হায়দরাবাদের চিকড়পল্লী থানায় আল্লু অর্জুন, তার নিরাপত্তারক্ষী এবং সন্ধ্যা সিনেমা হলের মালিকের বিরুদ্ধে সেকশন ১০৫ এবং ১১৮ (১) ধারায় মামলা করে রেবতির পরিবার।
প্রয়াতের পরিবারের অভিযোগ, আল্লু অর্জুনের আগমনের কোনো আগাম খবর দেওয়া হয়নি। প্রেক্ষাগৃহের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাজনিত কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।
এদিকে রেবতির মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছিলেন আল্লু অর্জুন। পাশাপাশি শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। শুধু তিনিই নন, রাশমিকা মান্দানাও রেবতির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছিলেন। রেবতির পরিবারকে ২৫ লাখ রুপি আর্থিক সাহায্য প্রদানের ঘোষণাও দেন আল্লু অর্জুন।