ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, আমরা আজ যে জায়গায় বসে আছি এই জায়গাটি একটি পবিত্র জায়গা, পবিত্র ভূমি। এই ঐতিহাসিক রাজারবাগ থেকেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে গভীর রাতে যারা প্রথম সাড়া দিয়েছিলেন তারা এই রাজারবাগের পুলিশ সদস্য।
মঙ্গলবার (২১ মে) সকালে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
এ সময় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ পুলিশ মেধাবৃত্তি ২০২২ এর আওতায় ৩১৭ জন ও ডিএমপি শিক্ষাবৃত্তি ২০২৩ এর আওতায় ৮১৪ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা ও শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, তোমরা যারা এখানে রয়েছ, তোমাদের পিতা যারা পুলিশে কাজ করছেন তাদের পূর্বসূরিরা অকুতোভয় সৈনিক। যারা দেশ মাতৃকার জন্য পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সামান্য থ্রি নট থ্রি রাইফেল নিয়ে। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা যুদ্ধ করেছিলেন এবং বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের বাঙালিদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছিলেন; সেই সব বীর সদস্যদের উত্তরসূরি আমরা। আর তোমরা সেই গর্বিত পিতাদের গর্বিত সন্তান। এখানে ১ হাজার ১৩১ জন কৃতি শিক্ষার্থী রয়েছে, এখানে হাজার তারার মেলা বসেছে। তোমাদের যে অর্থ দেওয়া হয়েছে এটা বড় কথা নয়, তোমাদের যে কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে এটাই সম্মানের বিষয়।
তিনি বলেন, পুলিশের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা, জনগণের জানমাল, সরকারি সম্পদ হেফাজত করা। অন্য যেকোনো সংস্থার কর্ম ঘণ্টা আছে কিন্তু পুলিশের কোনো কর্ম ঘণ্টা নেই। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকতে হয়। পরিবারকে সময় দেওয়া এবং পরিবারের খোঁজখবর নেওয়ার সময়টুকুও হাতে থাকে না। তারপরও তোমরা কিন্তু থেমে নেই, তোমাদের এই কৃতিত্বই তারই প্রমাণ।
হাবিবুর রহমান বলেন, জীবনে চলার পথে আমরা কোনো না কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তির জীবনী অনুসরণ করে চলি। আমিও তোমাদের একজন ব্যক্তির জীবন অনুসরণ করতে বলব, তিনি আর কেউ নন, আমাদের সবার শ্রদ্ধাভাজন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা যদি তার জীবন, কর্ম, চিন্তাসহ সবকিছু পর্যালোচনা করি তাহলে আমরা দেখব তিনি একজন আদর্শ মানুষের প্রতিকৃতি।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা যখন শিক্ষা গ্রহণ করি তখন শিক্ষার উদ্দেশ্য কী তা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্য থাকে বড় হয়ে একটি ভালো চাকরি করবে। তারা চাকরি কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি ঝুঁকে থাকে। কিন্তু শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মনুষ্যত্ববোধ অর্জন করা, সংরক্ষণ করা ও জীবনে তা প্রতিফলিত করা, সেই বিষয়টি সব সময় তোমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে।