প্রায় ৫০,০০০ বছর আগে নাকি এই পৃথিবীতে একটি বিরাট উল্কাপিণ্ড ধাক্কা মেরেছিল, আর সেই সময়েই মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) সৃষ্টি হয়েছিল লোনার হ্রদ। কিন্তু সেই হৃদটিরই (Lonar lake) জল হঠাৎ করে রাতারাতি গোলাপি রঙের হয়ে যাওয়ায় বেবাক বনে গেছেন স্থানীয় লোকজন।
মুম্বই থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে বুলধানা জেলার লোনার হ্রদ ১টি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এবং বিভিন্ন সময় বিশ্বের নানা বিজ্ঞানীরা এখানে আসেন। সেই বিখ্যাত হৃদের জল কেনই বা হঠাৎ করে বর্ণ পরিবর্তন করলো তা নিয়েই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
১.২ কিলোমিটার ব্যাসের ওই হৃদের জলের রং গোলাপি হয়ে যাওয়ায়, কেবল স্থানীয় মানুষজনই নয়, প্রকৃতিপ্রেমী থেকে বিজ্ঞানী, প্রায় সকলকেই অবাক করে দিয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন ওই হৃদের রং পরিবর্তনের ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগেও এমন হয়েছে, তবে এবার যেন আরও গাঢ় হয়ে ফুটে উঠেছে গোলাপি রঙটি।
এদিকে লোনার হ্রদ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন কমিটির সদস্য গজনান খারাত সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন যে, “জলের মধ্যে অনেক শ্যাওলা রয়েছে। হৃদটির লবনাক্ততা এবং এই শ্যাওলাগুলির প্রতিক্রিয়াতেও জলের রঙের এই পরিবর্তন হতে পারে,” তিনি বলেছিলেন।
“এর আরও একটি বৈশিষ্ট্য হল এই লেকের জলের গভীরে এক মিটারের নিচে কোনও অক্সিজেন নেই। ইরানেও এমন একটি হ্রদের সন্ধান পাওয়া যায়, যেখানে লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে জল লালচে রঙের হয়ে গেছে”, বলেন তিনি ।
গজানন খারাত বলেন, গত কয়েক বছর ধরে লোনার হ্রদের জলস্তর বেশ কিছুটা কমে গেছে এবং এতে মিষ্টি জলও নেই বললেই চলে।
এদিকে আওরঙ্গাবাদের ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর মারাঠওয়াদা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রধান ডঃ মদন সূর্যবংশীও এই রং পরিবর্তনের ঘটনা দেখে একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “এই ঘটনা কোনওভাবেই কোনও মানুষ রঙ দিয়ে তৈরি করতে পারে না”। “এটা একটা প্রাকৃতিক ঘটনাই, অনেক সময়েই অনেক ছত্রাক থাকে যা সাধারণত জলকে সবুজ রং দেয়। ঠিক সেভাবেই এই ঘটনা (বর্তমান রঙ পরিবর্তন) লোনার ক্রেটারের একটি জৈবিক পরিবর্তন বলেই মনে হচ্ছে”, বলেন তিনি। সূত্র: এনডিটিভি বাংলা