নোভেল করোনার প্রকোপ থেকে এখনও পর্যন্ত রেহাই মেলেনি। তার মধ্যেই এ বার বিউবোনিক প্লেগের আতঙ্কে কাঁপছে চিন। করোনা হানা দেওয়ার আগে গত বছর নভেম্বরে দেশের উত্তরের স্বায়ত্তশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়ায় দু’জনের শরীরে নিউমোনিয়াগ্রস্ত প্লেগ ধরা পড়ে। সেই মঙ্গোলিয়াতেই সম্প্রতি ফের নতুন করে থাবা বসিয়েছে বিউবোনিক প্লেগ। তাতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে সর্বত্র। ছোঁয়াচে এই রোগের থেকে মানুষকে সতর্ক করতে ইতিমধ্যেই তৃতীয় পর্যায়ের সতর্কতা জারি হয়েছে সেখানে। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, সময় থাকতে রাশ টেনে না ধরলে, করোনার মতো এই প্লেগও মহামারির আকার নিতে পারে।
তাতেই নডে় চড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। রবিবার বায়ান্নুর-সহ ইনার মঙ্গোলিয়ার সর্বত্র তৃতীয় পর্যায়ের সতর্কতা জারি করা হয়। বলা হয়, চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত এই সতর্কতা জারি থাকবে। এই সময়ের মধ্যে প্লেগের জীবাণু বইতে পারে এমন কোনও প্রাণী শিকার করা বা খাওয়া যাবে না। কোনও কারণ ছাড়া আচমকা জ্বর হলে বা অসুস্থ বোধ করলে অথবা প্লেগের কোনও লক্ষণ দেখা দিলে, সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে তা জানাতে হবে।
মূলত মাছি থেকে তীক্ষ্ণ দাঁত বিশিষ্ট পার্বত্য ইঁদুর বা মারমটের মাধ্যমে এই বিউবোনিক প্লেগ ছড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু)-র দাবি, সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে, আক্রান্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির এই রোগে মৃত্যু হতে পারে। তাই সকলকে সচেতন থাকতে নির্দেশ দিয়েছে ইনার মঙ্গোলিয়ার স্বাস্থ্য দফতর। তাদের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘‘শহরে প্লেগ মহামারির আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আত্মসুরক্ষা সম্পর্কে আরও সতর্ক হতে হবে সাধারণ মানুষকে। শরীরে কোনও রকম অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে তা জানাতে হবে।’’ কোথাও মৃত মারমট পড়ে থাকলে তা-ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে, গত বছর মারমটের কাঁচা মাংস খেয়ে ইনার মঙ্গোলিয়ার বায়ান-উলগি প্রদেশে এক দম্পতি বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হন। তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু হলেও তাঁদের বাঁচানো যায়নি। তাই নতুন করে বিউবোনিক প্লেগের খবরে খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সেখানে। তবে শুধুমাত্র বিউবোনিক প্লেগই নয়, শূকরের মাংস থেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ছড়িয়ে তা মহামারির আকার নিতে পারে বলে গত সপ্তাহেই সতর্কতা জারি করেন সে দেশের গবেষকরা। চিনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সে দেশের ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সেন্টারের তরফে জানানো হয়, শূকরের মাংস থেকে জেনোটাইপ-৪(জি৪) ভাইরাসের মাধ্যমে মানবশরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রবেশ করতে পারে। তাই সব মিলিয়ে সেখানে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। সূত্র: আনন্দবাজার