স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫০। ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে ‘অ্যাটলাস ফাইভ’ রকেটে চেপে মঙ্গলের উদ্দেশে পাড়ি দিল নাসার মঙ্গলযান। ‘মার্স ২০২০’ অভিযানে রকেটেযাত্রী একটি রোভার ও একটি খুদে হেলিকপ্টার। এই প্রথম ভিন্গ্রহের আকাশে উড়বে বিদ্যুৎচালিত কপ্টার। নাম রাখা হয়েছে ‘ইনজেনুয়িটি’। আর নাসার ‘কিউরিয়োসিটি’ রোভারের উত্তরসূরির নাম ‘পার্সিভিয়ারেন্স’।
তবে যাত্রা-শুরু খুব সুগম হয়নি। উৎক্ষেপণের ঘণ্টা দুয়েক বাদেই অ্যাটলাসের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল নাসার। উৎকণ্ঠা দেখা দেয় কন্ট্রোল রুমে। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেই সিগন্যাল ফিরে পান বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, ‘‘চিন্তার কিছু নেই। কিউরিয়োসিটির মঙ্গল-যাত্রার সময়েও এ রকম হয়েছিল।’’ প্রথমে পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছবে মঙ্গলযান। তার পরে আধ ঘণ্টা জিরিয়ে চালু হবে দ্বিতীয় ইঞ্জিন। ভিন্গ্রহে পাড়ি দেবে দুই রকেটযাত্রী।
মঙ্গলের ‘রুটে’ এখন ভাল ভিড়। গত সপ্তাহে প্রথমে রওনা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মঙ্গলযান ‘আমাল’। তার পরে পাড়ি দেয় চিনের ‘তিয়ানওয়েন-১’। আর আজ রওনা দিল মার্কিন যান। সাত মাসের দীর্ঘ সফরের পরে তিনটিই পৌঁছবে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে। সব ঠিক থাকলে ১৮ ফেব্রুয়ারি লালগ্রহে পা ফেলবে নাসার রোভার পার্সিভিয়ারেন্স। ৮০০ কোটি ডলার ব্যয়ে এই অভিযানের বিশেষত্ব অন্য। পার্সিভিয়ারেন্স শুধু লালগ্রহের মাটিতে নামবেই না, গবেষণার শেষে মঙ্গলের মাটির নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরেও আসবে।
মঙ্গল অভিযান নিয়ে বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন, ‘মহাকাশের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’। যত বার রোভার পাঠানো হয়েছে, অর্ধেক ক্ষেত্রেই মাটিতে নামতে গিয়ে ভেঙে পড়েছে যান। ভিন্গ্রহে অবতরণের ধাপটি সবচেয়ে কঠিন। এ পর্যন্ত আমেরিকাই শুধু সফল হয়েছে। এ বারে সফল হলে, নবম মার্কিন যান নামবে লাল-মাটিতে। তবে তার আগে পার করতে হবে ‘সাত মিনিটের আতঙ্ক’। ঘণ্টায় ১৯,৩০০ কিলোমিটার গতিবেগ সাত মিনিটে কমে শূন্য হবে। সাত মাস পরে জিরোবে যান। সূত্র: আনন্দবাজার