লাদাখে কুড়িজন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর পরই তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন। এ বার সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে সরাসরি তাঁকে একগুচ্ছ প্রশ্ন করলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তাঁর প্রশ্ন, কবে চীনা সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকেছিল? খবরে বলা হচ্ছে, ৫ মে চীনের সেনা ভারতের এলাকায় ঢোকে। এটা কি ঠিক? সরকার কি উপগ্রহ থেকে ছবি পাচ্ছে না? আমাদের গোয়েন্দারা কি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে কোনও খবর পাঠায়নি? শুধু কোর কম্যান্ডার স্তরে কেন বৈঠক হলো., কেন কূটনৈতিক স্তরে পদক্ষেপ নেওয়া হলো না? ২০১৩তে দুইটি মাউন্টেন ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন করার কথা ছিল, সরকার কি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তার রূপায়ণ করছে না?
সোনিয়া জানিয়েছেন, কংগ্রেস পুরোপুরি দেশের সেনার সঙ্গে আছে। বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁদের পাশে রয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে দেশ শুনতে চায় যে, সীমান্তে আগের স্থিতাবস্থা আবার বহাল হবে।
তবে সর্বদল বৈঠকে সোনিয়াই একমাত্র যিনি এই ভাবে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন। বাকি সব দলই মোটামুটি সরকারের পাশে থাকার কথা বলেছে।
পরে প্রধানমন্ত্রী তাঁর জবাবে বলেন, ”চীনা সেনা ভারতের কোনও এলাকা দখল করতে পারেনি। কোনও পোস্টও নয়। আমাদের ২০ জন জওয়ান শহিদ হয়েছেন। যাঁরা ভারত মাতাকে ভয় দেখাচ্ছে, তাঁদের উপযুক্ত ফলভেগ করতে হবে। কেউ আমাদের এক ইঞ্চি জমি দখল করতে পারবে না। আমাদের সেনাবাহিনী একাধিক সেক্টরে দ্রুত যেতে পারে। এই ক্ষমতা তাঁদের আছে।”
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, ”আমরা কোনও ভুল বার্তা দেব না। চীনে গণতন্ত্র নেই, ডিক্টেটরশিপ আছে। ওরা যা খুশি তাই করতে পারে। আমাদের তাই হাতে হাত মিলিয়ে লড়তে হবে। ভারত জিতবেই। এটা ঐক্যের সময়। ঐক্য জরুরি। তৃমমূল সরকারের সঙ্গে আছে।” তাঁর দাবি, ”চীনকে টেলিকম, বিমান, রেলের মতো ক্ষেত্রে ঢুকতে দেওয়া উচিত নয়। আমাদের অসুবিধা হতে পারে। তাও আমরা চীনা সংস্থাকে এই সব ক্ষেত্রে ঢুকতে দেব না।”
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেছেন, ”দেশজুড়ে মানুষ চীনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ। তাই কোনও মতবিরোধ থাকা উচিত নয়। সবাইকে একযোগে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। সকলের উচিত কেন্দ্রের পাশে দাঁড়ানো।” নীতীশও চীনা জিনিসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।
সিপিআই নেতা ডি রাজার চিন্তা অবশ্য অ্যামেরিকাকে নিয়ে। তিনি জিনেয়েছেন, অ্যামেরিকা তাঁদের জোটে সামিল হওয়ার জন্য ভারতকে টানছে। ভারতের উচিত হবে, সোই জোটে না যাওয়া। সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি পঞ্চশীলের উল্লেখ করেন।
শরদ পাওয়ার, চন্দ্রশেখর রাও থেকে শুরু করে বাকি সকলেই পুরোপুরি সরকারকে সমর্থনের কথা বলেন। সূত্র: ডয়েচে ভেলে