ডারউইনের ‘সারভাইভাল অব দ্যি ফিটেস্ট’ তত্ত্বে পৃথিবীর সমস্ত জীবের জন্যই ধ্রুব সত্য । মাটিতে থাকা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কীট থেকে গভীর নীল জলে ভেসে বেড়ানো নীল তিমি আবার সুপার কম্পিউটার আবিষ্কার করা, ভিনগ্রহে পাড়ি দেওয়া মানুষ কেউই এই তত্ত্বের বাইরে নয় ।
এই কথাটাই বুঝে গিয়েছিল বিলুপ্তপ্রায় গ্যালাপ্যাগোস কচ্ছপটি । তাই নিজের বিলুপ্তির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা প্রজাতিকে বাঁচাতে একটা নয়, দু’টো নয়, জীবনভর ৮০০ সন্তানের জন্ম দিল এক কচ্ছপ । তবে সেক্ষেত্রে একেবারেই মানুষের হাত নেই, সে কথা ঠিক নয় ।
ইক্যুয়েডরে প্রশান্ত মহাসাগরের উপর অবস্থিত আগ্নেয় শিলা নির্মিত গ্যালাপ্যাগোস দ্বীপকে পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ঠ জীবন বৈচিত্র্যের এলাকা বলা হয় । শুধু তাই নয়, চার্লস ডারউনের বিখ্যাত কর্মকাণ্ডের সাক্ষীও এই দ্বীপ । সেখানেই আদি বসবাস এই গ্যালাপ্যাগোস কচ্ছপের । যারা আয়োতনে হয় বিশাল ।
সেই গ্যালাপ্যাগোস কচ্ছপ একটা সময় বিলুপ্তির মুখে চলে যায় । এই প্রজাতিকে বাঁচাতে উদ্যোগী হয় ইক্যুয়েডর প্রশাসন । ‘দিয়েগো’ নামের একটি কচ্ছপকে ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো জু থেকে নিয়ে আসা হয় সান্তাক্রুজের গ্যালাপ্যাগোস ন্যাশনাল পার্কে । সেখানে দিয়েগো অংশ নেয় ব্রিডিং প্রোগ্রামে ।
এরপর নিজের প্রজাতিকে রক্ষা করতে মোট ৮০০ সন্তানের জন্ম দেয় দিয়েগো । এখন ১০০ বছর বয়স বৃদ্ধ, প্রাচীন দিয়েগোর ।
তাই জাতীয় উদ্যাগ কর্তৃপক্ষ তার কাঁধ থেকে এই বিশাল দায়ভার নামিয়ে তাকে তার স্বাভাবিক বাসভূমিতে ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে । দিয়েগোর সঙ্গে সেখানে ফেরত পাঠানো হচ্ছে আরও ২৫টি কচ্ছপকে ।
এখন দিয়েগোর ওজন ৮০ কেজি, ৯০ সেন্টিমিটার তার দৈর্ঘ্য, ১.৫ মিটার তার উচ্চতা । তার প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যা এখন বেড়ে হয়েছে ২০০০ হাজার । এর মধ্যে ৪০ শতাংশই দিয়েগোর দান ।
৫০ বছর আগে গ্যালাপ্যাগোস প্রজাতির মাত্র ২টি পুরুষ ও ১২টি মহিলা কচ্ছপই বেঁচে ছিল । ১৯৬০-এর মাঝামাঝি সময় থেকে এদের বাঁচাতে ব্রিডিং প্রোগ্রামটির সূচনা হয়েছিল । সূত্র: নিউজ ১৮