কোনো মুসলমানের মৃত্যুর পর তাকে গোসল করানো, কাফন পরানো ও জানাজার নামাজ পড়ে তাকে কবরস্থ করা মুসলমানদের ওপর ফরজে কেফায়া। মৃতের ওয়ারিস, অভিভাবক ও তার আত্মীয়-স্বজন থাকলে কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব প্রথমত তাদের ওপর বর্তায়। যদি মৃতের কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করার কেউ না থাকে, তাহলে তার কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করা মুসলমানদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। কেউ এই দায়িত্ব পালন না করলে সবাই গুনাহগার হবে।
বন্যায় বা পানিতে ডুবে কোনো মুসলমানের মৃত্যু হলে তার শরীর পাক থাকলেও তাকে গোসল দিতে হবে। তবে জলমগ্ন লাশ যদি পানি থেকে ওঠানোর সময়ই একবার, দুবার বা তিনবার গোসলের নিয়তে নেড়ে উঠানো হয়, তাহলে তাই গোসল গণ্য হবে।
পানিতে ডুবে লাশ অনেক বেশি ফুলে গেলে, হাত লাগালে ফেটে যাওয়ার আশংকা থাকলে গোসল করানোর নিয়েতে শুধু ওপর থেকে পানি ঢেলে দেওয়াই যথেষ্ট।
লাশ গোসল করানোর পর অন্যান্য যথানিয়মে জানাজা পড়তে হবে। শুকনো জায়গা না পাওয়া গেলে পানির মধ্যে দাঁড়িয়েও জানাজা পড়ে নেওয়া যায়। জানাজার জন্য একাধিক মৃত ব্যক্তির লাশ উপস্থিত হলে, প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা জানাজার নামাজ আদায় করা উত্তম। তবে লাশগুলো একত্র করে একসাথে জানাজা পড়াও জায়েজ। এ ক্ষেত্রে সবগুলো লাশ ইমামের সামনে পশ্চিম দিকে একের পর এক অথবা উত্তর-দক্ষিণে সারিবদ্ধভাবে রাখবে।
লাশ কবর দেওয়ার জন্য শুকনো জায়গা পাওয়া গেলে ওই জায়গায় স্বাভাবিক নিয়মে দাফন করতে হবে অথবা শুকনো অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদি লাশ কবর দেওয়ার মতো শুকনা জায়গা না পাওয়া যায়, শুকনো অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থাও না থাকে এবং বন্যার পানি চলে যাওয়ার অপেক্ষা করলেও লাশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে, কাফন পরিয়ে জানাজার সম্পন্ন করে লাশ ভাসিয়ে দিতে হবে।
তবে শুকনো জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে বা লাশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে লাশ না ডুবিয়ে দেবে না বরং পানি নেমে যাওয়ার অপেক্ষা করবে এবং পানি নেমে যাওয়ার পর যথাযথভাবে দাফন করবে।