ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাতে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। টানা প্রায় এক সপ্তাহের সংঘাতে প্রাণহানির সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে আগেই। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল উপকূলে বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর কথা জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
আর এবার ইসরায়েলের কাছে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে রাজকীয় নৌবাহিনীর জাহাজ মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ‘নিরাপত্তা বাড়াতে’ এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটি। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তা জোরদার করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য পূর্ব ভূমধ্যসাগরে দুটি রয়্যাল নেভির জাহাজ এবং নজরদারি বিমান পাঠাবে’ বলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে।
বিবিসি বলছে, ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র হস্তান্তরের মতো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখতে’ শুক্রবার থেকে বিমানটি টহল শুরু করবে। এছাড়া পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে তিনটি মারলিন হেলিকপ্টার এবং রয়্যাল মেরিনদের একটি দলও পাঠানো হচ্ছে।
এর আগে ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ডাউনিং স্ট্রিট বলেছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সুনাকের ফোনালাপের উদ্দেশ্য ছিল- ‘হামাসের ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলার পর ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাজ্যের অবিচল সমর্থন পুনর্নিশ্চিত করা’।
ডাউনিং স্ট্রিট আরও বলেছে, ‘বিস্তৃত অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং সংঘর্ষ আরও বাড়ানোর যে কোনও প্রচেষ্টা প্রশমিত করতে আগামী দিনগুলোতে অতিরিক্ত সামরিক সহায়তা নিশ্চিত করাসহ সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হবে। তিনি (সুনাক) পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, যুক্তরাজ্য সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং হামাস আর কখনও ইসরায়েলি জনগণের বিরুদ্ধে হামলা করতে পারবে না বলে সম্মত হয়েছেন।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হামাস গাজার বেসামরিক জনগণের মধ্যে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সুনাক বলেন, সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষা এবং মানবিক সাহায্যের সুবিধার্থে সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।’
এর আগে সুনাক বৃহস্পতিবার সকালে মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল-সিসির সাথে কথা বলেন। মূলত গাজায় মানবিক প্রবেশাধিকারের অনুমতি দিতে রাফাহ ক্রসিং খোলার গুরুত্ব নিয়ে সেখানে তিনি আলোচনা করেন এবং একইসঙ্গে ব্রিটিশ ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের যেন চলে যাওয়ার জন্য একটি বের করা যায়।
উল্লেখ্য, গত শনিবার হামাস গাজা থেকে দক্ষিণ ইসরায়েলে নজিরবিহীন আক্রমণ চালায়। সেই হামলায় ইসরায়েলে কমপক্ষে ১৩০০ জন নিহত এবং প্রায় দেড়শো জনকে আটক করে হামাস।
অন্যদিকে ইসরায়েল পাল্টা বিমান হামলা শুরু করার পর থেকে গাজায় ১৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।