২০০২ সালে গোধরা কাণ্ডের সময়ে অন্ত্বসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ ও তার পরিবারের সদস্যদের খুনের অভিযোগে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
ভারতের আলোচিত বিলকিস বানু মামলায় গুজরাট সরকারের সিদ্ধান্ত খারিজ করলো দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দিলো মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার আইনি এক্তিয়ারই নেই গুজরাট সরকারের।
আসলে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে তারা। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিলকিস বানুর ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার যে অনুমতি দিয়েছিল গুজরাট সরকার, এদিন তা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
কিন্তু ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট গুজরাট সরকারের নির্দেশে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়। ধর্ষকদের কার্যত বীরের সম্মান দিয়ে বরণ করা হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে। তারপরই দেশজুড়ে অসন্তোষের হাওয়া বইতে শুরু করে। একাধিক মামলা দায়ের হয় গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে।
ধর্ষকদের মুক্তি পাওয়ার চার মাসের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিলকিস। শীর্ষ আদালতের কাছে রিভিউ পিটিশন দায়ের করেন তিনি। ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত আরেকবার বিবেচনা করে দেখুক শীর্ষ আদালত, আবেদন জানান বিলকিস।
সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য একাধিক আবেদন জমা পড়ে শীর্ষ আদালতে। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও এই আবেদন জানিয়েছিলেন। তার পরেই গুজরাট সরকারের কাছে হলফনামা তলব করে শীর্ষ আদালত।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) এই মামলার রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। শুনানির শুরুতেই শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, ধর্ষকদের সাজা মওকুব করার কোনো আইনি এক্তিয়ার নেই গুজরাট সরকারের। কারণ মামলা দায়ের থেকে সাজা ঘোষণা-সবটাই হয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারের অধীনে।
তাই ধর্ষকদের সাজার মেয়াদ ফুরানোর আগে তাদের মুক্তি দেওয়া প্রসঙ্গে গুজরাট সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হচ্ছে। এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে আসলে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে গুজরাট সরকার। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই আত্মসমর্পণ করতে হবে ধর্ষকদের।