রিয়ালের সফেদ শুভ্র জার্সিতে মাঠে নামছেন কিলিয়ান এমবাপে, ক্লাব ফুটবলে গত এক দশকের সবচেয়ে আরাধ্য যে ছবিটা, বুধবার রাতে সেটাই দেখা গেল পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে। রিয়ালে এমবাপে আসতে চেয়েছিলেন আরও বছর ছয়েক আগেই। কিন্তু নানা টাল-বাহানায় আসা হয়নি। যখন এলেন, তখন পেয়েছেন গোল। সঙ্গে হাত রাখলেন শিরোপায়। রিয়ালে অভিষেকটা এক অর্থে রঙিনই করেছেন এই ফ্রেঞ্চ সেনসেশন।
এমবাপের পাশাপাশি উয়েফা সুপার কাপে রিয়ালের হয়ে গোল পেয়েছেন ফেডে ভালভার্দেও। টনি ক্রুসের পর রিয়াল মাদ্রিদের মাঝমাঠের ইঞ্জিন এখন তারই হাতে। তারুণ্যনির্ভর রিয়াল এদিন পাত্তা দেয়নি ইতালিয়ান ক্লাব আতালান্তাকে। ২-০ গোলের জয়ে সুপার কাপের শিরোপা ঘরে তুলল তারা।
আর এই নিয়ে ষষ্ঠবার ট্রফিটি জিতল লস ব্লাঙ্কোসরা। পাঁচবার করে জেতা বার্সেলোনা ও এসি মিলানকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে বেশিবার জয়ের রেকর্ড নিজেদের করে নিয়েছে তারা। চলতি বছরে এটি তাদের চতুর্থ শিরোপা। গত জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ের পর তারা ঘরে তোলে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। সামনে আছে ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগ।
যদিও ওয়ারশতে জয়ের রাতে রিয়ালের শুরুটা ছিল বেশ ছন্নছাড়া। প্রথমার্ধে গোলের জন্য একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি তারকায় ঠাসা রিয়াল স্কোয়াড। ১৫ মিনিটে আসে প্রথম সুযোগ। ভালভের্দের পাসে বক্সে ফার্স্ট টাচেই শট নেন এমবাপে। সেই শট ঠেকিয়ে দেন আতালান্তার এক ডিফেন্ডার।
২৪তম মিনিটে সুযোগ পায় আতালান্তা। ডান দিক থেকে মার্টেন ডে রুনের ক্রস ক্লিয়ার করার চেষ্টায় হেড করেন রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার এডার মিলিতাও। সেই হেডে বল লাগে ক্রসবারে। বিরতির ঠিক আগে আবার দৃশ্যপটে ক্রসবার। এবার রিয়ালের রদ্রিগোর শট ফিরে আসে সেখান থেকে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দুর্দান্ত সেভে রিয়ালের ত্রাতা বনে যান থিবো কোর্তোয়া। মারিও পাসালিচের হেড ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দলকে রক্ষা করেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক। ঘড়ির কাঁটা যখন ১ ঘণ্টা স্পর্শ করছে, তখনই গোল পেয়ে যায় রিয়াল। বেলিংহ্যামের পাস বক্সে খুঁজে পায় ভিনিসিয়ুসকে। বাঁ দিক থেকে আসা সেই বলটা ফাঁকায় পেয়েছিলেন ভালভার্দে। সেখান থেকেই আসে প্রথম গোল।
৬১তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক হুয়ান মুসো। পরের মিনিটে দুর্দান্ত সেভে ব্যবধান বাড়তে দেননি তিনি। গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক। তবে ম্যাচের ৬৮ মিনিটে তাকেও ব্যর্থ হতে হয়েছে। বেলিংহ্যামের পাসে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন বিশ্বকাপজয়ী ফ্রেঞ্চ তারকা এমবাপে।
শেষ পর্যন্ত এতেই জয় নিশ্চিত হয় লস ব্লাঙ্কোসদের। সেই সঙ্গে রেকর্ডের পাতায় আরও একবার নাম লেখালেন রিয়ালের কোচ কার্লো অ্যানচেলত্তি। ইতিহাসের প্রথম কোচ হিসেবে ৫ বার সুপার কাপ জেতার নজির তার নামের পাশে। তিনবার জিতেছেন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। আর দুবার এসি মিলানের হয়ে জিতেছিলেন উয়েফা সুপার কাপ।