নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে চলতি মাসেই সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত অন্তর্বর্তী সরকারের— এমনটা মনে করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের দুই শীর্ষ নেতা। তাদের মতে, নির্বাচনে দীর্ঘসময় নিলে অস্থিতিশীল হবে দেশ। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে গেছে। তাই অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের মতে, নির্বাচিত সরকার কী ধরনের সংস্কার কাজ করবে, এর রূপরেখা দেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে সংস্কারের প্রস্তাব তাদের।
নুরুল হক নুর বলেছেন, নির্বাচনের যদি রোডম্যাপ না থাকে আর ভোট না হলে আমি অগ্রীম বলে দিচ্ছি বাংলাদেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকসহ নানা খাতে অস্থিরতা তৈরি হবে।
সাইফুল হক বললেন, সরকার সঠিক পথে আছে কি না এবং শিগগিরই যে কাজগুলো করার কথা, সেগুলো করতে পারছে কি না— যদি করতে পারে আমাদের সমর্থন থাকবে।
দুই রাজনীতিবিদের মতে, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে দ্রুত সংস্কার করতে হবে। যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিতে হবে। এতে কালক্ষেপণ হলে আস্থার সংকটে পরবে সরকার।
এ নিয়ে সাইফুল হক বলেন, আমি উদ্বেগের একটা জায়গা দেখছি, কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন, সংস্কার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশে কোনো নির্বাচন নয়। এ ধরনের কিছু অযৌক্তিক ও আবেগপ্রসুত কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি। রাজনৈতিক দল ও জনগণের সমর্থনের বাইরে গিয়ে কেবল ছাত্রদের সমর্থনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করা সম্ভব না।
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার কাজ দ্রুত শুরু করার পাশাপাশি কেউ যেন বিচার নিয়ে প্রশ্ন না তোলে, সেদিকে নজর দেয়ার দাবিও তাদের।
সাইফুল হকের মতে, অর্থপাচার, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মামলা দিলে বেশি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য হয়। ঢালাওভাবে যে মামলা দেয়া হচ্ছে, এর মধ্যে অনেক মামলা হয়তো টিকবে না।
নুরুল হক নুরের ভাষ্য, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তথ্যভিত্তিক মামলা হওয়া দরকার। এখন যে মামলাগুলো হচ্ছে সেগুলোর সঠিক গ্রাউন্ড বিবেচনা করা হচ্ছে না। ফলে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হবে।
গণঅভ্যুত্থানে পর নতুন বাংলাদেশে বিভেদ ও স্বেচ্ছাচারিতা ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।