নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে আজ (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটায় রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারের শুনানি শুরু হয়েছে । আদালতে ১৫ জন বিচারপতির সঙ্গে যোগ দিয়েছেন দুজন এডহক বিচারপতি। ওই দুজন গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের মনোনীত। আদালতের সিদ্ধান্ত হবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে।
আদালতে অং সান সু চি মিয়ানমারের পক্ষে হাজির হয়েছেন। গাম্বিয়ার পক্ষে আছেন দেশটির আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু। নিয়মানুয়ায়ী শুরুতেই দুই এডহক বিচারপতি গাম্বিয়ার নাভি পিল্লাই এবং মিয়ানমারের প্রফেসর ক্লাউস ক্রেস শপথ নিয়েছেন।
আইসিজের মামলাটি যুগান্তকারী দুটি কারণে। প্রথমত, প্রতিবেশী না হয়েও বৈশ্বিক সনদে স্বাক্ষরকারী হিসেবে মিয়ানমার থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরের আরেকটি উপমহাদেশ আফ্রিকার রাষ্ট্র গাম্বিয়া এই মামলার বাদী। এই প্রথম মানবাধিকারের লড়াইয়ের জন্য শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী একজন রাজনীতিক গণহত্যার সাফাই দিতে হাজির হচ্ছেন শান্তি প্রাসাদে।
১৯৯১ সালে শান্তি পুরস্কার বিজয়ের ২৮ বছর পর সামরিক শাসনোত্তর মিয়ানমারের প্রথম বেসামরিক সরকারের প্রধান অং সান সু চি তাঁর দেশের সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার যৌক্তিকতা তুলে ধরতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অবতীর্ণ হচ্ছেন। ২০১৭ সালের আগস্টে শুরু হওয়া রোহিঙ্গাবিরোধী সামরিক অভিযানের পর সু চি জাতিসংঘের মতো বৈশ্বিক ফোরামে খুব কমই অংশ নিয়েছেন।
সু চির বিরুদ্ধে সর্বজনীন এখতিয়ার নীতির আলোকে নেদারল্যান্ডসে মামলা হয়েছে বলে শোনা গেলেও তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এই নীতির আলোকে মামলায় নেদারল্যান্ডসে গত সেপ্টেম্বরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে একজন সিরীয় বিদ্রোহী নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে সরকারপ্রধান হিসেবে সু চি দায়মুক্তির অধিকারী হওয়ায় তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা নেই বলেই ধারণা করা হয়। আর্জেন্টিনায় তাঁর বিরুদ্ধে একই ধরনের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে।
আইসিজেতে এই শুনানি উপলক্ষে এবং দ্য হেগ শহরে গাম্বিয়া ও মিয়ানমার ছাড়াও অন্য কয়েকটি দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা হাজির হয়েছেন। এসব দেশের মধ্যে আছে বাংলাদেশ ও কানাডা। মামলায় গাম্বিয়াকে সমর্থন দিতে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) কূটনীতিকেরাও উপস্থিত হয়েছেন। আরও জড়ো হয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী এবং মিয়ানমার সরকারের সমর্থকেরা।
অনলাইন নিউজ ডেস্ক/বিজয় টিভি