কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনের রহস্যজনক মৃত্যুর ১২ দিন পর কোর্টের নির্দেশে হত্যা মামলা রুজু হয়েছে থানায়। গত শনিবার (২৪ জুলাই) কুমারখালী থানায় এমামলা রুজু করেন নিহতের ভাই বসির উদ্দিন । বসির উদ্দিন বাদী হয়ে মামলায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাসেল হোসেন সহ ৬ জনকে আসামী করেন। অন্যান্য আসামীদের মধ্যে মো. আফজাল হোসেন, মো. মুক্তার হোসেন, মো. হাবিবুর রহমান, হাবিবুর রহমান হান্নান ও মো. আলম কাজীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত ১৩ জুলাই মঙ্গলবার রাতে নাসির উদ্দিন বিশ্বাস নিজ গ্রামের বাড়ি নাউতি এলাকা থেকে রাতে কুষ্টিয়া শহরের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে কুষ্টিয়া – রাজবাড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কস্থ সৈয়দ মাসুদ রুমি সেতুর মাঝখানে তাঁকে ও তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল পড়ে থাকতে দেখে ‘৯৯৯’ এ পুলিশকে জানানো হয়।
এরপর খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং তাঁকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে দুর্বৃত্তের হামলা নাকি সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে এনিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, গত ১৩ জুলাই শিলাইদহ ইউনিয়নের নাউথী গ্রামের ব্যবসায়ী ও চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসির উদ্দীন রাত ৯ টার দিকে কুমারখালী থেকে কুষ্টিয়া যাবার পথে সৈয়দ মাসুদ রুমি সেতুর উপর পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা আসামিরা তাকে দেশীয় অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে ফেলে রেখে যায়।
পরবর্তীতে পথে চলাচলরত ব্যক্তির মোবাইল ফোন পেয়ে নাসিরের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়েছে নাসিরকে হাসপাতালে নেবার সময় মুমূর্ষু অবস্থায় সে জানায় মামলায় উল্লেখিত ব্যক্তিরা তাকে মেরেছে। এবং ১৫ জুলাই কুমারখালী থানায় আসামীদের নাম উল্লেখ করে এজাহার জমা দিলে না নিয়ে ফেরত দেয়া হয় বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
রোববার (২৪ জুলাই) দুপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাসেল হোসেন বলেন, নাসির উদ্দিনের সাথে কোনদিন দুইকথা হয়নি। ব্যবসায়ী বা রাজনৈতিক কোন ক্রন্দল ছিলোনা। জীবনে এক সাথে এককাপ চাও পান করিনি। সম্পূর্ণ হয়রানিমূলক ভাবে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শুনেছি নাসির উদ্দিন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
এবিষয়ে জানতে মামলার বাদী বসির উদ্দিনকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে নিহতের ছেলে রাকিব মুঠোফোনে বলেন, এভাবে আমার কথা বলা ঠিক হবেনা। আপনি চাচার সাথে কথা বলেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নাসিরের মৃত্যু হয়। আদালতের নির্দেশে মামলা রুজু করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।