একমাস পেরিয়ে গেলেও কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার গড়াই নদী সংলগ্ন যদুবয়রা লালন আবাসন কেন্দ্র -৪ এ ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে পানিবন্ধী হয়ে পড়েছেন আবাসনের ৫১ টি পরিবার। নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার (১৯আগষ্ট) দুপুরে সরেজমিনে গেলে লালন আবাসন বাসিন্দারা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে আবাসন সংলগ্ন এলাকা থেকে অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের ফলে এবছর ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন দিয়ে পানি প্রবাহ হয়ে চলাচলের একমাত্র রাস্তাসহ চারপাশ প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে পরিবার গুলো।
তাঁরা আরো বলেন, ২০১৩ সালে হাঁসদিয়া লালন আবাসন ১ নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে লালন আবাসন ৪ ও বিলীন হয়ে যাবে।
জানা গেছে, ২০০৭ সালে নির্মিত হয় আশ্রয়ণ প্রকল্প হাসদিয়া লালন আবাসন ১, পৌর লালন আবাসন ২, নন্দলালপুর লালন আবাসন৩ যদুবয়রা লালন আবাসন ৪। প্রতিটি আবাসনে ৬০ টি করে মোট ২৪০ টি ঘর নির্মাণ করা হয়। তন্মধ্যে ২০১৩ সালে গড়াই নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় হাঁসদিয়া আবাসনের ৫১ টি ঘর। বর্তমানে তিন আবাসনে ১৮৯ টি ঘরে প্রায় শতাধিক পরিবার বসবাস করে।
এবিষয়ে যদুবয়রা লালন আবাসন ৪ এর সাধারণ সম্পাদক আকুল মন্ডল বলেন, একমাস আগে থেকে ভাঙন লেগেছে। ইউএনও স্যারকে প্রথম থেকেই জানিয়ে আসছি। কিন্তু কোন ফল হয়নি। এখন চলাচলের একমাত্র রাস্তাসহ চারপাশ প্লাবিত হয়েছে। ঘর থেকেই বের হলেই পানি আর পানি।
আবাসনের সভাপতি শাজাহান বলেন, এবছর নদী থেকে অতিরিক্ত বালু উত্তোলন করা হয়েছে। ফলে আবাসনের পাড় ভেঙে পানি ঢুকে পড়েছে। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না করা হলে যেকোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
এদিকে লালন আবাসন কেন্দ্র প্লাবিত হওয়ার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৯ আগষ্ট) দুপুরে এলাকা পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল।
এছাড়াও গত ২৬ জুলাই সকালে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা – কর্মচারী বৃন্দ এবং বিকেলে পরিদর্শন করেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সিরাজুল ইসলাম ও কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল বলেন, আবাসন এলাকা পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক প্রায় ১৫ দিন আগেই জিওব্যাগ ফেলার কথা ছিল। কিন্তু তাদের (পাউবো) অফিসিয়াল সমস্যার কারনে বাস্তবায়ন করা হয়নি। প্রতিরোধে যোগাযোগ করা হচ্ছে পাউবো’র সাথে।
তিনি আরো বলেন, এরআগে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন আবাসন এলাকা।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আছরাফ উদ্দিনকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করলে তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তাঁর মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।