থানা হেফাজতে এক আসামিকে নির্যাতনের অভিযোগে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানার ওসি মো. মুজাহিদুল ইসলামসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ আদালতে মামলা করা হয়েছে। রোববার (৫ মে) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করেন নির্যাতনের শিকার আবদুল বারেক।
মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হোসেন বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ কাজী আবদুল হান্নান মামলার ঘটনার সত্যতা যাচাই করে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগীর জখমের বিষয়ে সিভিল সার্জনকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’
মামলার বাদী আবদুল বারেক কেয়াইন ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া গ্রামের প্রয়াত হাসেম ব্যাপারীর ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
বাদীপক্ষের আইনজীবী জামাল হোসাইন জানান, পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২৩ এপ্রিল থানায় একটি মামলা করা হয়। পরদিন ওই মামলায় এজাহারনামীয় আসামি দেখিয়ে আবদুল বারেকসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন রাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় এনে পুলিশ নির্যাতন করে। পরদিন গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতে পাঠানো হলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আইনজীবী জামাল হোসাইন বলেন, ‘জেলহাজতে থেকে আবদুল বারেক বাদী হয়ে রোববার সিরাজদিখান থানার ওসি ও আট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলা করেন।
গত ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় কুচিয়ামোড়া কলেজ গেট এলাকায় মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদের সমর্থক আবদুল বারেকপক্ষ এবং দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মহিউদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সারোয়ারের সমর্থক কেয়াইন ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলীপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে হামলায় ওসিসহ আহত হন ৯ পুলিশ সদস্য। ওই ঘটনায় সিরাজদিখান থানার এসআই লোকমান বাদী হয়ে আবদুল বারেকসহ ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় আবদুল বারেকসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সিরাজদিখান থানার ওসি মুজাহিদুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, ‘২২ এপ্রিল উল্লেখিত ঘটনাস্থলে দুইপক্ষ মারামারি হয় এবং পুলিশকে উপর হামলা করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে এবং হামলার ঘটনায় একপক্ষেরেএকজন বাদী আরেকটি মামলা করে। এসব ঘটনায় ১২ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে ১ নং আসামি আবদুল বারেক (সাবেক চেয়ারম্যান) বাদী হয়ে আদালতে একটি পিটিশন দিয়েছে বলে শুনেছি। এর বেশি আর কিছু জানি না।