কিশোরগঞ্জে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা আবাদ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পানিতে কচুরিপানা দিয়ে বেড তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন জাতের সবজি ও মসলা আবাদ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা এ চাষে কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন। তারা জানিয়েছেন দেশে শতকরা ১০ ভাগ হাওর ও জলাভুমি রয়েছে। এ আবাদের ফলে একদিকে বিষমুক্ত সবজি ও মসলার উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে, অন্যদিকে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়ায় ফলে কৃষকরা ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
কিশোরগঞ্জ শহরের ভিতর দিয়ে প্রবাহমান নরসুন্দা নদীতে প্রায় সারা বছরেই পানি থাকে। এ বছর সেই পানির উপর কচুরিপানা দিয়ে বেড তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন জাতের সবজি ও মসলার আবাদ করা হয়েছে।
এ নদীতে ১২টি ভাসমান বেডে লাউ, মিস্টি কুমড়া,শসা, বরবটি, মূলা, বারি মরিচ-১ ও বারি মরিচ-২ ও জার্মান জাতের ঘাসের আবাদ করা হয়েছে। কোনো প্রকার সার ও কীটনাশক ছাড়াই সেখানে ভালো ফলন হয়েছে। এতে নিজেরা খাচ্ছেন ও বিক্রি করে কৃষক লাভবান হয়েছেন। ফলে কৃষকরা ভাসমান বেডে আবাদের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে সদর ও করিমগঞ্জ এ দুইটি উপজেলায় ভাসমান বেডে আবাদের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলার সবকটি উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। ভাসমান কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির উপর কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে কৃষকরা পুরোদমে পানিতে ভাসমান বেড বানিয়ে সবজি ও মসলা আবাদ শুরু করে দিয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণতা অর্জন করেছে। এখন দেশের মানুষ পুষ্টি ঘাটতিতে রয়েছে। দেশে ১০ ভাগ হাওর ও জলাভুমি রয়েছে। এ হাওর ও জলাভুমিতে কেবল মাছ চাষ নয়, সেখানে মাছের পাশাপাশি ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা আবাদ করলে দেশের মানুষের পুষ্ঠি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। তাই সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় উদ্যোগে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয় করণ কার্যক্রমের অধীনে দেশের ১৩ টি জেলার ২৫টি উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, পানিতে কেবল মাছ উৎপাদন হবে না। সেখানে ভাসমান বেড বানিয়ে সবজি ও মসলা উৎপাদন করে মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা হবে।
কিশোরগঞ্জ কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জলাভুমিতে সবজি ও মসলা আবাদে একদিকে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। অন্যদিকে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।
নিউজ ডেস্ক / বিজয় টিভি