মেহেরপুর জেলা জজ আদালত ভবনের তৃতীয় তলা থেকে স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার সময় নিচে পড়ে স্বামী-স্ত্রী দুই জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের স্বামী মামুনুর রশিদ ও রামদেবপুর গ্রামের স্ত্রী সিমা খাতুন।
পারিবারিক আদালতে স্ত্রী সিমা খাতুনের করা মামলার মীমাংসা শেষে জেলা জজ আদালতের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে বাদীকে ফেলে দেওয়ার সময় স্ত্রী বাঁচার জন্য স্বামী মামুনুর রশিদের জামা চেপে ধরলে দুজনে নিচে পড়ে যান। পরে আদালতে উপস্থিত লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।
আহত সিমা খাতুন জানান, ১০ বছর আগে গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের মামুনুর রশিদের সঙ্গে বিয়ে হয়। নানান কারণে তার সঙ্গে সংসার জীবন ভালো না যাওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরে মেহেরপুর জেলা জজ পারিবারিক আদালতে খোরপোষ দাবি করে একটি মামলা করা হয়। পরে দুই পরিবারের সমঝোতায় মামলাটি মীমাংসা করা হয়। আজ দুপুরে খোরপোষ বাবদ টাকা দেওয়ার দিন ছিল।
তিনি আরও জানান, টাকা দিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য আদালত থেকে বের হওয়ার সময় স্বামী আমাকে জড়িয়ে ধরে আদালতের বারান্দায় নিয়ে গিয়ে ধাক্কা দেয়। এ সময় আমি বারান্দার লোহার রেলিংয়ের ওপর দিয়ে নিচে পড়ে যাওয়ার সময় তার জামা ধরলে সেও আমার সঙ্গে তিন তলা থেকে নিচে পড়ে যায়। পরে আদালতে থাকা লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এতে আমার বাম হাত ভেঙে যাওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগেছে।
অন্যদিকে মামুনুর রশিদ স্ত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, খোরপোষের টাকা দিয়ে আদালত থেকে বের হলে তার স্ত্রী তাকে ধাক্কা দেয়। দুজনে নিচে পড়ে তার শরীর বিভিন্ন স্থান ক্ষত হয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ভারপ্রাপ্ত ডা. মঞ্জুরুল হাসান জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহত স্বামী-স্ত্রীর অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। তবে স্ত্রীর হাত ও স্বামীর কোমরের হাড় ভেঙে গেছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।
আদালতে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী আনোয়ার হোসেন জানান, দুপুরে হঠাৎ করে দেখি, একজন যুবক একটি মেয়েকে ধাক্কা দিয়ে তিন তলা থেকে নিচে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় মেয়েটি ছেলেটার জামা ধরলে দুইজন নিচে পড়ে যায়। পরে জানতে পারি, তারা স্বামী-স্ত্রী।