চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে হাফিজা খাতুন নামে এক নার্সকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার রাতে জীবননগর হাসপাতাল রোডে অবস্থিত মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে এ হত্যাকাণ্ড হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাফিজার স্বামী কবির হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত হাফিজা জীবননগরের সন্তোষপুর গ্রামের শমসের আলীর মেয়ে। আটককৃত কবির হোসেনের বাড়ি উপজেলার বালিহুদা গ্রামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জীবননগর থানার ওসি জাবীদ হাসান।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় অবস্থান করছিলেন হাফিজা খাতুন। সেখানে কোনো রোগী ছিল না। এ সময় কেউ ছুরি দিয়ে তার গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। গলাকাটা অবস্থায় ওই নার্স সিঁড়ি বয়ে নিচে নেমে এসে রিসেপশনের সামনে পড়ে যান। পরে এক সহকর্মী তাকে দেখে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে হাফিজাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান সুজন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছিল।
মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমের ম্যানেজার কেয়া খাতুন জানান, তার ডিউটি বিকেলে ৫টা পর্যন্ত। এ কারণে সন্ধ্যার দিকে তিনি ক্লিনিক থেকে বাড়ি চলে যান। রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা শোনেন। হাফিজার সহকর্মী নার্স বিউটি খাতুন বলেন, রাত ৯টার দিকে ক্লিনিকের রিসেপশনের সামনে হাফিজাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। পরে আমার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। সকালে স্বামীর সঙ্গে হাফিজার ঝগড়া হয় বলে শুনেছি।
জীবননগর থানার ওসি জাবীদ হাসান বলেন, হাফিজা খাতুন ১০ বছর ধরে ওই ক্লিনিকে নার্সের চাকরি করেন বলে জেনেছি। তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গেছে। তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। সেই স্বামী মাঝেমধ্যে ক্লিনিকে আসত। আমরা ক্লিনিকের মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, সেখানে রোগী খুব কম থাকে। তাদের কার্যক্রমও সীমিত। বিকেল ৪-৫টার দিকে ক্লিনিকের ম্যানেজারসহ সবাই চলে যান। যদি কোনো রোগী থাকে, সে ক্ষেত্রে নার্সরা সেখানে থাকেন। এই সুযোগে হয়তো কেউ তাকে হত্যা করেছে।
তিনি আরো বলেন, যে ছুরি দিয়ে হাফিজার গলা কাটা হয়েছে, সেই ছুরির কভার দেখেছি ঘটনাস্থলে। সিআইডি আলামত সংগ্রহ করছে। প্রাথমিকভাবে আমরা দুইজনকে সন্দেহ করেছি, আমাদের হেফাজতে হাফিজার স্বামীসহ দু-একজন আছে, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আমাদের কাছে অনেক তথ্য চলে এসেছে। যে ছুরি দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, সে ছুরি আমরা অন্য জায়গা থেকে উদ্ধার করেছি। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।