বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, এই মুহূর্তে আমাদের চালের রিজার্ভ আছে প্রায় ১৮ লাখ টন। এটা আমাদের চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত। রমজানে নিত্যপণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ থাকবে। আমাদের এখন দরকার উৎপাদক ও আমদানিকারক থেকে হোলসেলার এবং রিটেইলারদের সাপ্লাই চেইন নিয়ে কাজ করা। এটা করতে পারলে আমাদের ভোক্তারা ন্যায্যমূল্যে পণ্য পাবেন।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ইআরএফ-বিসিসিসিআই বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা নিত্যপণ্য আমদানি করে, এমন আমদানিকারকদের আমরা ডেকেছি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও মৎস্য মন্ত্রণালয়কে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি সমন্বয় করে দিয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উৎপাদন, আমদানি বা রপ্তানি করে না বরং পলিসি নিয়ে কাজ করে। সেই পলিসিগুলো দিয়ে যদি সবার সমন্বয়ে ভোক্তাদের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হয়, তাহলে সাপ্লাই চেইনের সাথে সম্পর্ক যুক্ত সবাইকে একটি প্লাটফর্মে নিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, সামনে রমজানকে ঘিরে বড় চ্যালেঞ্জ। রমজানকে ঘিরে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছি। বিশেষ করে চিনি ও তেলের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এসব পণ্য প্রায় ৯০ শতাংশ আমদানি করতে হয়। আমরা আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী এতে সম্মতি দিয়েছেন। আশা করছি অতি দ্রুত ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ এই শুল্ক একটি যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসবে। এটা করতে পারলে রমজানে ভোক্তারা একটা সুবিধা পাবে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের সাথে আমাদের পেঁয়াজ এবং চিনি আমদানি নিয়ে একটি প্রতিবন্ধকতা ছিল। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে আমাদের কথা হয়েছে। রমজান উপলক্ষ্যে পেঁয়াজ ও চিনি আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করা হবে। রমজানে টিসিবি থেকে ভোক্তা পর্যায়ের এক কোটি পরিবারকে আমরা পাঁচটি প্রয়োজনীয় পণ্য (চাল, চিনি, তেল, ডাল, ছোলা) দেই৷ এটার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ভারত থেকে পেঁয়াজ ও চিনি আমদানি করা হবে। এতে করে আমাদের সাপ্লাই চেইনের ওপর একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমরা শুধুমাত্র টিসিবির মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দিতে চাচ্ছি না বরং অতিরিক্ত সাপ্লাইয়ার তৈরি করতে চাচ্ছি, যাতে বাজারের অন্যান্য অংশে সাপ্লাইটা স্মুথ হয়।
বাংলাদেশের-চায়না চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আপনারা জানেন চায়নার সাথে সবচেয়ে বড় ট্রেড গ্যাপ। এই গ্যাপ পূরণ করতে আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা যদি মনে করি, আম বা সবজি রপ্তানি করে রাতারাতি ২২-২৩ বিলয়ন ডলারের রপ্তানি গ্যাপ পূরণ করে ফেলব… এই চিন্তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, যে পণ্যগুলো আমরা চীন থেকে আমদানি করছি, সেই আমদানি প্রতিস্থাপন যদি বাংলাদেশি শিল্পকারখানার সহায়তায় করতে পারি ও এগুলো যদি রপ্তানি করতে পারি, তাহলে এ গ্যাপটা দ্রুত কমে আসবে। সামনে চায়নার ইকোনমিতে একটা বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। সেই চ্যালেঞ্জকে আমাদের বড় অপরচুনিটি হিসেবে কাজে লাগাতে হবে। ইউএস-চীন বাণিজ্য সম্পর্ক যত কঠিন হবে, চীনের বিনিয়োগও তত ডাইভারশন হবে। সামনে চীন বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশ সরকার ১০০টি ইকোনমিক জোন করেছে। সেসব জোনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের টানতে হবে। এক্ষেত্রে বিডার ফরেন ডাইরেক্টরদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।