আমাদের চারপাশে মানবজীবনে হরহামেশাই নানা রোগের সংক্রমণ ঘটতে দেখা যায়। এমন কিছু জটিল রোগ আছে, যার সমাধান, রোগ অনুযায়ী নানা ধরনের অপারেশন। তবে আমরা প্রায়ই একটা অপারেশনের নাম শুনে থাকি, তা হলো স্কিন গ্রাফটিং।
এটি হচ্ছে, কোনো ক্ষতস্থানে নতুন করে চামড়া লাগানো। সাধারণত পোড়া, সংক্রমণ বা দুর্ঘটনার কারণে কিংবা ক্যানসারের জন্য শরীরের কোনো অংশের বড় একটি স্থানের ত্বক বা টিস্যু নষ্ট হয়ে যায়। তখন সেই ক্ষতটি ঢাকতে করা হয় স্কিন গ্রাফট।
এছাড়াও অনেক সময় আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থানের বিকৃতি বা দাগ দূর করাসহ বিভিন্ন কারণে স্কিন গ্রাফট করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। যদি কখনও ক্ষতটা গভীর হয় বা ক্ষতটি কোনো হাড় কিংবা জয়েন্টের ওপরে হয়, সে ক্ষেত্রে এর সাথে আরও জটিল অপারেশন যেমন ফ্ল্যাপ সার্জারির প্রয়োজন হয়ে থাকে।
এদিকে স্কিন গ্রাফট করতে অন্য কারও দেহ থেকে ত্বক বা চামড়া নেওয়া যায় না। কারণ, এক্ষেত্রে অন্যজনের শরীরের অংশ রোগীর শরীরের সাথে রি-অ্যাকশন করে এবং গ্রাফট টিস্যু নষ্ট হয়ে যায়। তাই রোগীর নিজের শরীর থেকেই ত্বক বা চামড়া নেওয়া হয়।
তবে কোনো প্রাণীর দেহ থেকে ত্বক নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু সেটা অনেক ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রস্তুত করা হয়। সাধারণত প্রাণীর গ্রাফট কিছুদিনের জন্য দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে রোগীর নিজের শরীরের ত্বক দিয়ে সেটা প্রতিস্থাপন করতে হয়।
আবার অনেক ক্ষেত্রে মৃত মানুষের ত্বকও নেওয়া হয়ে থাকে। তবে তার আগে সেটা অবশ্যই প্রক্রিয়াজাত করতে হয় এবং সেই ত্বক মাত্র কয়েকদিনের জন্য ব্যবহার করা যায়।
বর্তমানে প্রাণী বা মরদেহের প্রক্রিয়াজাতকৃত ত্বক বা চামড়া বাণিজ্যিকভাবে কিনতে পাওয়া যায়। ছোট ক্ষতের জন্য এ ধরনের ত্বক বাংলাদেশের ঢাকা শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে পাওয়া যায়। তাই স্কিন গ্রাফটিং জাতীয় সকল চিকিৎসার জন্য প্রায় মানুষই এখন এ হাসপাতাল থেকে সেবা নিয়ে থাকেন।