বর্তমান সময়ে দেশের আলোচিত নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতিমা তনি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডি থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি। তবে পোস্টে কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ওই পোস্টে রোবাইয়াত ফাতিমা তনি লেখেন, আমি যখন লাইভ করতাম না, তখন আমার প্রতিষ্ঠান সানভিস বাই তনি মিনিমাম ১২/১৫ জন লাইভ প্রেজেন্টারের সঙ্গে কাজ করেছে, একজন কুখ্যাত মহিলা ছাড়া বাকি সবার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক, তাদেরকে আমি অসম্ভব সম্মান করি, ভালোবাসি।
তিনি আরও লেখেন, আমি অলওয়েজ বিশ্বাস করি এবং সব জায়গায়, সব ইন্টারভিউতে বলেছি—আমরা উদ্যোক্তারা ও প্রোমোটাররা একে অপরের পরিপূরক, একে অপরের বন্ধু। একসঙ্গে কাজ করতে গেলে একটু-আকটু ঝামেলা হতেই পারে, ঘরে অনেকগুলো ভাই-বোন থাকলে তাদের মধ্যেও হয়।
বাংলাদেশে অনলাইনে ৫০ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা বিভিন্ন পণ্য নিয়ে কাজ করে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, যারা নিজেকে লাইভ প্রেজেন্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান এটা কিন্তু আপনাদের জন্য খুব বড় একটা জায়গা। এইবার আসি আসল কথায়, বাংলাদেশের একমাত্র তবলা বাদকের বৌ ইদুর আম্বানি নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে, কোনো মানুষকেই সে মানুষ মনে করে না, উদ্যোক্তা হোক আর লাইভ প্রেজেন্টার হোক সবাইকে তিনি খোঁচাবে, সবাই তার হাতের ফাঁকা দিয়ে পড়ে যায়—একটা মানুষের সঙ্গে সে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখে না, শুধুমাত্র নায়িকাদের পা চাটা ছাড়া।
এই নারী উদ্যোক্তা আরও উল্লেখ করেন, সে নিজেকে নম্বর ওয়ান ব্রান্ড প্রোমোটার হিসেবে পরিচয় করায়, আর অন্য প্রোমোটারদের মেয়াদোত্তীর্ণ বলে হেয় করে। কয়েক দিন আগে এক টকশোতে সে আমার সঙ্গে কোনো যুক্তিতেই পারে না এবং উপস্থাপিকার প্রতিটা প্রশ্নের জবাবে নিজেকে নির্দোষ আর অন্য প্রোমোটারদের ওপর সব দায় চাপিয়ে দেয়, যার ভিডিও আপনারা অলরেডি দেখেছেন। তখন আবার আপার জামাই আমার হাসব্যান্ডকে নিয়ে নোংরা ভাষায় পোস্ট দেয়, যা সবাই দেখেছেন।
তিনি লেখেন, রিসেন্টলি আমি একটি রেস্টুরেন্ট ওপেন করি এবং এটার প্রোমোশন করি কারণ এটাতে ১০০০ মানুষের ক্যাপাসিটি, যেটাতে আমার ৪০% শেয়ার এবং এটা ছাড়াও আমার আরও অন্য রেস্টুরেন্টেও শেয়ার আছে—যা নিয়ে আমি কোনোদিন শো-অফ করি নাই। কিন্তু এই আপা নিজে যেমন পা থেকে মাথা পর্যন্ত ফেক, ঠিক তেমনি আমাকে নিয়ে পোস্ট দিয়ে লিখে—আমি নাকি রেস্টুরেন্টের ফেক মালিক। তার আর তার জামাইয়ের আগের অপকর্মগুলোই এখনো ভুলি নাই, আবার সে আসছে আমাকে খোঁচাতে।
প্রতিদিন কোনো না কোনো উদ্যোক্তা কোনো না কোনো প্রোমোটার তার অপকর্মের বিরুদ্ধে পোস্ট দিচ্ছে, কিন্তু সে থামছে না—সবার সঙ্গে যা তা করেই যাচ্ছে। জুয়া খেলা থেকে শুরু করে রং ফর্সাকারী ক্রিম, এমন কিছু নাই যে সে টাকা পেলে প্রোমোট করে না।
কেউ প্রতিবাদ করলে পেজ উড়াই দেওয়ার ভয়, মামলা হামলার ভয় দেখানোর অভিযোগ জানিয়ে পোস্টে তিনি লিখেন, ‘তিনি আর তার জামাই নিজেকে মাফিয়া ভাবা শুরু করেছেন। আমি কাউকে নিজে থেকে কোনোদিন খোঁচাই না, আবার কেউ খোঁচাতে আসলে ছাড়ি না।
তাকে তার সব অপকর্মের কথা মনে করিয়ে দিয়েছি, ফেক শো-অফ দিয়ে মানুষ বেশিদিন কোথাও টিকে না—এটাই বাস্তবতা। তাকে শায়েস্তা করতে যেয়ে আমাকে আমার গ্রামের ভাষায় অনেক কিছু বলতে হয়েছে, বা আমি বেশি রেগেও গেছিলাম। কিন্তু সবগুলো কথা শুধুমাত্র তার জন্য প্রযোজ্য, অন্য কেউ এইসব গায়ে মাখবেন না। আপনারা সম্মানের সাথে কাজ করেন, আপনাদের কাউকে নিয়ে কারো কোনো প্রবলেম নেই—সবাই ভালোবাসে আপনাদের। তারপরও আমার কথায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমা করে দেবেন। সে নোংরামো করে এই সেক্টরটাকে নষ্ট করছে, সিন্ডিকেট করে অন্য প্রেজেন্টারদের কাজ কেড়ে নিচ্ছে, ছোট উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যা তা ব্যবহার, মোটা টাকা নিয়ে ঠিকমতো কাজ না করা আরো কত কি আপনারা সব জানেন! যেটা কোনো ভাবেই কাম্য নয়, তার অসভ্যতাগুলো এইবার বন্ধ করতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, সে কাজ করুক তাতে কারো কোনো সমস্যা নাই, কিন্তু অন্যদের পেছনে লাগা বন্ধ করুক, উদ্যোক্তাদের টাকা নিয়ে সঠিকভাবে তাদের কাজ করে দিক, ফেক নিতা আম্বানি সাজা শো-অফ বন্ধ করুক, তার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক—আর এখনো না হলে বয়কট।
এর আগে এক পোস্টে তনি লেখেন, বাড়াবাড়ি সবার সঙ্গে করেছেন, আমার সাথে না! আপনার সেক্টরের কোনো প্রোমোটার পর্যন্ত আপনাকে দেখতে পারে না! কেন! ভেবে দেখেছেন! আপনার মতো ফেক শো-অফ করে আমি মার্কেটে ভিউ ধরে রাখিনি, মানুষ আমাকে ভালোবাসে, তাই যখন কোথাও নিজের শোরুম ওপেন করি হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে, যার ভিডিও সোস্যাল মিডিয়া তে অভাব নেই। আপনাকে কোনো ওপেনিংয়ে নিলে আপনাকে দেখতে আপনার ক্যামেরাম্যান আর চামচারা ছাড়া কোনো মানুষ আসে না। বাই দ্যা ওয়ে, সবাইকে নিজের মতো ভণ্ড ভাববেন না, আমার একটা না ৩টা রেস্টুরেন্টে শেয়ার আছে, যা নিয়ে আপনার মতো শো-অফ করতে হয় না, আর আপনার মতো মেয়েদের আমরা টাকা দিয়ে ভাড়া করে নিয়ে আসি, আপনাকেও নিয়ে আসছিলাম আমার কোনো একটা ব্রাঞ্চে লাইভ করার জন্য, ভুলে যান নাই নিশ্চয়ই!
আমি নিজেকে ফেক রেস্টুরেন্টের মালিক বলছি এটা প্রমাণ করতে পারলে সোশ্যাল মিডিয়াতে চেহারা দেখাব না উল্লেখ করে তিনি লেখেন, সাহস থাকলে আমার নাম ধরে পোস্ট দেন, মিথ্যা কথা ছড়ানোর জন্য কান ধরে উঠ বস করাবো। সবাইকে নিজের মতো ভাববেন না বেহায়া আপা, আমি পানির মতো স্বচ্ছ, পরিষ্কার, আমার ফেক ভিউ দেখিয়ে মানুষের থেকে কাজ নিতে হয় না, কেউ আমাকে টাকা দিয়ে কিনতে পারে না।
সবশেষে তিনি লেখেন, যে অপকর্ম গুলো করেছেন উদ্যোক্তাদের সঙ্গে, আপনার বিরুদ্ধে ডাক দিলে কয়েক শ’ উদ্যোক্তা দাঁড়াবে, তখন পালানোর জায়গা পাবেন তো! এখন তো বাঁচানোর জন্য হাউন আংকেল নাই।