৭৮ তম কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ক্লাসিক্স বিভাগে দেখানো হয় সত্যজিৎ রায়ের ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’। ছবিটি রেস্টোর করা হয় ‘ফোর কে’ ভার্সনে। সত্যজিতের অনুগামী মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা ওয়েস অ্যান্ডারসন প্রেজেন্ট করেন ছবিটি। কেবল তাই-ই নয়, ছবিটির রেস্টোরেশনের অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন ওয়েস। তিনি ছয় বছর থেকৈ রেস্টোরেশনের কাজ করেছেন।
পশ্চিমাবিশ্বে সত্যজিৎ রায়ের দু’টি কাজ খুবই জনপ্রিয়— এক , ‘অপু ট্রিলজি’ ও দুই, ‘চারুলতা’। তবে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ও যে কম চর্চিত নয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অনেকেই মনে করেন, সত্যজিতের ক্যারিয়ারের এক অনন্য অধ্যায় শুরু হয়েছিল এই ছবি থেকে। ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’র আগে তিনি যে যে ছবি তৈরি করেছিলেন, তার অধিকাংশই অতীতকে কেন্দ্র করে। ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ থেকে বর্তমান সময়কে ধরতে শুরু করেন সত্যজিৎ। স্বাধীনতার ২৫-৩০ বছর পরের কাহিনি নিয়ে এই ছবি।
ছবিতে একটি মেমরি গেমের দৃশ্য কোনোদিন ভুলতে পারবেন না দর্শক। জঙ্গলে পিকনিকের সময় মেমরি গেম খেলেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শর্মিলা ঠাকুর, রবি ঘোষ, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, সমিত ভঞ্জ অভিনীত চরিত্ররা। সে এক আইকনিক দৃশ্য। সেই দৃশ্যটির অনুকরণ করেছেন ওয়েস অ্যান্ডারসন স্বয়ং। ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার ছবি ‘অ্যাস্টেরয়েড সিটি’তে ওয়েস ‘কপি’ করেন সেই দৃশ্যটি। কান-এ বসে ওয়েস বলেছিলেন, ‘আমি সত্যজিৎ রায়ের মেমরি গেমের দৃশ্যটি চুরি করেছি। আমার ছবিতে কাজে লাগিয়েছি।’
কথাটি বলার সময় ওয়েসের মুখে ছিল সন্তোষের ছাপ। সত্যজিতের ভক্ত তিনি। এ কথা একাধিক বার একাধিক জায়গায় বলেছেন। ফলে ‘গুরুদেব’ সত্যজিতের কালজয়ী সৃষ্টির একটি দৃশ্য নিজের ছবিতে ব্যবহার করে মানিকবাবুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ওয়েস।
১৯৭০ সালে মুক্তি পায় ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হয় ছবিটি। কানের ক্লাসিক্স বিভাগে স্ক্রিনিং উপলক্ষ্যে এবার সেখানে উপস্থিত ছিলেন শর্মিলা ঠাকুর, সিমি গারেওয়াল— ছবির অন্যতম শিল্পী। শর্মিলাকে সঙ্গ দিতে গিয়েছিলেন তার মেয়ে সাবা আলি খান।