যখন বলিউডে ‘লেডি সুপারস্টার’ কথাটা এখনো প্রতিষ্ঠিত ধারণা হয়ে ওঠেনি, তখনই শ্রীদেবী ছিলেন সেই উপাধির প্রকৃত দাবিদার। তিনি আজ পৃথিবীতে নেই, কিন্তু তার অনবদ্য চরিত্র ও সৌন্দর্যের মায়াজালে এখনো মুগ্ধ দর্শক।
শ্রীদেবী তার ক্যারিয়ারে অসংখ্য ব্লকবাস্টার ও কাল্ট সিনেমা উপহার দিয়েছেন। তবে এমন অনেক ছবিও ছিল, যেগুলোর প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন—আর সেগুলো পরেই হয়ে উঠেছে ইতিহাস।
তেমনই এক ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯২ সালের সুপারহিট ছবি ‘বেটা’ নিয়ে। চিত্রনাট্য শ্রীদেবীর পছন্দ হলেও ছবির নায়ক ছিলেন তার দেবর অনিল কাপুর—এ কারণেই ছবিটিতে কাজ করতে রাজি হননি তিনি। পরিচালক ইন্দ্র কুমার চেয়েছিলেন ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ জুটিকে আবারও বড় পর্দায় ফিরিয়ে আনতে; কিন্তু শ্রীদেবীর এককথার ‘না’-তেই বদলে যায় বলিউডের ইতিহাস।
এক সাক্ষাৎকারে ইন্দ্র কুমার জানিয়েছিলেন, প্রথমে ‘বেটা’ ছবিটি প্রযোজনা করছিলেন বনি কাপুর। কিন্তু স্ত্রী শ্রীদেবী এতে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালে ছবিটির দায়িত্ব নেন তিনিই। শ্রীদেবীর আপত্তির মূল কারণ ছিল—অনিল কাপুরের সঙ্গে রোমান্টিক দৃশ্যে অভিনয় করা তার কাছে অস্বস্তিকর লাগছিল।
অবশেষে ছবির নায়িকা হিসেবে চূড়ান্ত হন মাধুরী দীক্ষিত, এবং সে সিদ্ধান্তই তাকে পৌঁছে দেয় তার ক্যারিয়ারের সেরা উচ্চতায়। ‘ধক ধক করনে লাগা’ গানে মাধুরীর পারফরম্যান্স হয়ে ওঠে আইকনিক, আর ‘বেটা’ হয়ে যায় তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ।
‘বেটা’ আসলে ছিল তামিল হিট ‘এঙ্গা চিন্না রাসা’-র হিন্দি রিমেক। হিন্দি সংস্করণেও সাফল্যের ঝলক দেখা যায়—ছবিটি সে বছর ফিল্মফেয়ারে জেতে পাঁচটি পুরস্কার: সেরা অভিনেতা (অনিল কাপুর), সেরা অভিনেত্রী (মাধুরী দীক্ষিত), সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী (অরুণা ইরানি), সেরা প্লেব্যাক গায়িকা (অনুরাধা পাড়ওয়াল) এবং সেরা কোরিওগ্রাফি (সরোজ খান)।
তবে ‘বেটা’ প্রত্যাখ্যান করলেও শ্রীদেবী ও অনিল কাপুরের জুটি পরে ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’, ‘জুদাই’, ‘লাডলা’ ও ‘রূপ কি রানি চোর কা রাজা’-র মতো ছবিতে একসঙ্গে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।
বলিউডের ইতিহাসে এ ঘটনাটি আজও এক স্মরণীয় মোড়—যেখানে একজন অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তই অন্য একজনের জন্য হয়ে উঠেছিল ভাগ্যনির্ধারক অধ্যায়।