বর্তমানে আমাদের প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে বেশিরভাগ সময়ই কাটে ঘর বা অফিসের চারদেয়ালে বন্দী অবস্থায়। ফলে সূর্যের প্রাকৃতিক আলো গায়ে লাগার সম্ভাবনা সেরকম থাকে না বললেই চলে। অথচ আপনি কি জানেন প্রাকৃতিক এই রোদ গায়ে লাগার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে?
সূর্যের আলো ভিটামিন ডি এর অগাধ ভান্ডার। এই ভিটামিন ডি আমদের হাড়কে মজবুত ও শক্তিশালী করে, রক্ষা করে হাড় সংক্রান্ত যেকোনো রোগ থেকে। আর তাই, আর্থ্রারাইটিস রোগীদের জন্য প্রতিদিন নিয়ম করে রোদে থাকা বাধ্যতামূলক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে ভিটামিন ডি কিন্তু আপনার শরীরে এনার্জি বুস্ট করে। কারণ এই ভিটামিনের মাধ্যমে আপনার শরীরে এনার্জি বুস্টিং হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। এজন্য আপনি যদি ইমিউন সিস্টেম চাঙা রাখতে চান তবে দেরি না করে সূর্যের আলো গায়ে মাখুন।
সূর্যের আলোতে পাওয়া যায় নাইট্রিক অক্সাইড যা শরীরের রক্ত চলাচল নির্বিঘ্ন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উপরন্তু এটি আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের স্বাভাবিকতা ঠিক রাখতেও যথেষ্ট সাহায্য করে। এজন্য অ্যালার্জি বা অ্যাজমা আক্রান্ত প্রতিটি মানুষের দরকার নিয়মিত সূর্যের আলোতে থাকা।
বিজ্ঞান বলছে, সুর্যের আল আপনার ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। সূর্যের আলোতে থাকা লাল রঙের ছটা, আপনার দেহকোষের মাইটোকন্ড্রিয়ার উপর গুরুত্বপূর্ন প্রভাব ফেলে যার কারণে মানুষের স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
আবার, প্রাকৃতিক এই আলো আপনার মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার যেমন ডোপামিন, মেলাটোনিন ও সোরোটোনিন হরমনের ক্ষরণ ত্বরাণ্বিত করে। যার ফলে অবসাদ, দুশ্চিন্তা ও ক্লান্তি দূরীভূত হয়ে যায়। সূর্যের আলোর নীল রঙের ছটা আমাদের মনকে প্রভাবিত করে। এজন্য গবেষণা বলছে, যারা নিয়মিত সূর্যের আলোর সাহচর্যে থাকেন তাদের তুলনামূলক ভালো ঘুম হয়, যারা সূর্যের আলো গায়ে মাখতে পারেন না তাদের চাইতে।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে দিনে কতক্ষণ সূর্যের আলো গায়ে মাখতে হবে? উত্তর হচ্ছে আপনাকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট রোদে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন, রোদে দাঁড়িয়ে থাকার চেয়ে হাঁটা উত্তম। কেননা আপনি রদে একটানা দাঁড়িয়ে থাকলে রোদের তাপ তীব্রভাবে গায়ে লাগবে। যা আপনার ত্বক পুড়িয়ে ফেলতে পারে।
চলছে বসন্তকাল, চারিদিকে শীতের বিদায়ীবার্তা। রোদের তীব্রতাও উত্তরোত্তর বাড়ছে। তাই আজ থেকেই শুরু করুন রোদ্রস্নান। নিয়ম মাফিক গায়ে রোদ মেখে আরো সুস্থ ও সজীব হয়ে উঠুন।