কমবেশি সবাই মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে ভালোবাসে। কিন্তু মিষ্টি খাবার থেকেই শরীরে বাঁধে নানান রকমের জটিলতা। একের পর এক রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। এ জন্য চিনি একটি নীরব ঘাতক বলা হয়। স্বাস্থ্যসচেতন অনেকেই চিনি এড়িয়ে চলেন। বলিউড এবং হলিউডের অনেক তারকারা খাদ্যতালিকা থেকে বিদায় দিয়েছে চিনিকে। মাত্র দুই সপ্তাহ চিনি না খেলেই দারুণ কিছু উপকার পাওয়া যায় বলছেন পুষ্টিবিদরা।
হিন্দুস্থান টাইমের এক প্রতিবেদনে ভারতের পুষ্টিবিদ ভূমিকা পাটেল বলেন মাত্র ১৪ দিন চিনি এড়িয়ে গেলেই ম্যাজিকের মত বদললে যাবে আপনার জীবন। চিনি না খেলে আমাদের শরীরে কী ঘটে এ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি। চিনি ছাড়া সহজ কিছু নয়। প্রথম থেকে শুরু করে ১৪ দিন এই লম্বা সময় বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে আমাদের শরীরে। ভূমিকা পাটেল দিন অনুযায়ী সে বিষয়ে ব্যাখা দিয়েছেন।
প্রথম তিন দিন: চিনি ছাড়ার প্রথম তিন দিন সবচেয়ে কঠিন বলছেন পুষ্টিবিদ। কারণ এই সময়ে আমাদের শরীর চিনি ছাড়া থাকতে অভ্যাস্ত হতে শুরু করে। এই ধাপে এসে মাথাব্যথা, পেট ব্যথা, ক্লান্তি বোধ হয়। অনেক সময় দেখা যায় শরীর জ্বালাপোড়া করে। এতে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। এটা স্বাভাবিক কারণ, এই প্রথম তিন দিনে শরীরে চিনির যে ক্ষতিকর উপাদান জমা হয় সেটার ডিটক্সিং চলে।
চতুর্থ থেকে সপ্তম দিন: এখন শরীর চিনি ছাড়া আগের থেকে বেশি মানিয়ে নিতে শিখেছে। এই সময়ে মনোযোগ ও শক্তি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে বলে উল্লেখ্ করেছেন পুষ্টিবিদ। আর সপ্তম দিনে আপনি স্পষ্টভাবেই বুঝতে পারবেন আপনার পরিবর্তন।
অষ্টম থেকে দশম দিন: এক সপ্তাহ আপনি চিনি ছাড়া কাটিয়েছেন। অষ্টম দিন থেকে আপনার পাচনতন্ত্র আগের থেকেও ভালোভাবে কাজ করবে। কারণ অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ভারসাম্য ঠিক হতে শুরু হয় এই সময়ের মাঝে। ফলস্বরুপ, পেট ফাপা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বের ৭ বিপজ্জনক বিমানবন্দর
একাদ্বশ থেকে চতুর্দশ দিন: ১০ দিন চিনি না খেয়ে কাটিয়ে উঠে ১১তম দিনে আপনি দারুণ কিছু বিষয় লক্ষ্য করতে পারবেন। আপনার চিনি খাওইয়ার ইচ্ছা অনেক কমে যাবে। এমনি খুব বেশি ক্ষুধা লাগবে না আগের মত। আপনার ঘুম ভালো হবে। চিনি খেলে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা থেকে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগে। চিনি বিরতির কারণে এই সমস্যা আর হবে না, আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করবে।
আরও পড়ুন
চিনি না খাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি উপকার পাবেন: চিনির কারণে শরীরে যেসব জটিলতা তৈরি হয়, খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দিলে দারুন উপকার পাবেন বলেন বিশেষজ্ঞরা। শরীরে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পরে চিনি না খেলে। হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে যায়। পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। চিকিৎসকরা বলেন, যখন শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে কার্ডিওভাসকুলার,কিডনি এবং টাইপ টু ডায়াবেটিস সমস্যা হতে পারে।
সুন্দর ত্বকের বাঁধা চিনি। আপনি যদি সুন্দর ত্বক চান তাহলে চিনি বাদ দিতে হবে। খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দেওয়ার ফলে ব্রণ ও একজিমা কমতে শুরু করবে। সময়ের সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বেড়ে যায়। অনেক বলিউড নায়িকাই তাদের খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দিয়ে নিয়েদের সৌন্দর্য ধরে রেখেছেন।
চিনি না খেলে মানসিক ভাবেও বিভিন্ন উপকার আবেন। হুট করেই মুড সুয়িং হবে না। আপনার মেজাজ এবং মন ভালো থাকবে। আরও মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তিরও উন্নত হবে।