বর্তমান সময়ে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে রোগ বাড়ছে। এর ফলে স্থূলতা, স্ট্রেস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতার মতো বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। হরমোন হলো আমাদের শরীরের রাসায়নিক বার্তাবাহক যা রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে অঙ্গ এবং টিস্যুতে ভ্রমণ করে। এই রাসায়নিক বার্তাবাহকগুলো কেবল আমাদের মেজাজই নয়, আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে। কিছু অভ্যাস রয়েছে যেগুলো হরমোনে ভারসাম্যহীনতা তৈরির জন্য দায়ী। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. খাওয়ার পরে চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া
আমরা অনেকেই আমাদের প্রতিদিনের দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের পরে মিষ্টি কিছু খেতে পছন্দ করি। এই অভ্যাস আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞের মতে, খাবারের পরে চিনি বা চিনিযুক্ত খাবার খেলে ইনসুলিন রেজিস্টেন্সের কারণ হতে পারে। ইনসুলিন রক্তে চিনির (গ্লুকোজ) পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
২. ঘুমানোর আগে ফোন ব্যবহার
ঘুমানোর আগে ফোন স্ক্রল করা অনেকের মধ্যেই একটি সাধারণ অভ্যাস। এমনকি আপনি যদি ফোনে ইয়েলো লাইট অপশনটিও চালু করেন তবু এটি আপনার শরীরে মেলাটোনিন উৎপাদনকে ব্যাহত করতে পারে। মেলাটোনিন হলো শরীর দ্বারা উৎপাদিত একটি হরমোন যা রাত ও দিনের চক্র বা ঘুম-জাগরণ চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। যখন ঘুমের চক্র ব্যাহত হয়, তখন অসময়ে ঘুম আসে এবং দেরি করে ঘুম ভাঙে।
৩. ৪টার পরে ক্যাফেইন গ্রহণ
আমরা বেশিরভাগই দিনের মধ্যে কয়েক কাপ কফি এবং চা খাই এই ভেবে যে এটি আমাদের শরীরকে প্রভাবিত করবে না, কিন্তু শরীর প্রভাবিত হয়ই। কফি, চা এবং বায়ুযুক্ত পানীয়তে ক্যাফেইন থাকে যা কর্টিসলের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞের মতে, বিকাল ৪ টার পরে ক্যাফেইন গ্রহণ করলে কর্টিসলের উপর প্রভাব পড়ে। এটি একটি হরমোন যা স্ট্রেস প্রতিক্রিয়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই ঘুমানোর অন্তত ১০ ঘণ্টা আগে ক্যাফেইন গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
৪. খালি পেটে কার্বোহাইড্রেট খাওয়া
আপনি যদি সকালে বা খালি পেটে উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন তবে আপনার অভ্যাস পরিবর্তন করার সময় এসেছে। ডায়েটিশিয়ান কালরার মতে, খালি পেটে কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার অভ্যাস শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধের কারণ হতে পারে, যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। এটি বিশেষত ডায়াবেটিস হওয়ার দ্বারপ্রান্তে থাকা লোকদের জন্য ক্ষতিকারক।
৫. কম সবজি খরচ
বিশেষজ্ঞের মতে, শাক-সবজি কম খাওয়ার ফলে ইস্ট্রোজেন ডিটক্সিফিকেশন ব্যাহত হতে পারে। ইস্ট্রোজেন ডিটক্সিফিকেশন হলো বিপাকীয় প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে লিভার শরীর থেকে এই হরমোন নির্গত করতে সাহায্য করে। শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে এই ডিটক্স অপরিহার্য। সুতরাং, আপনার খাদ্যতালিকায় আরও শাক-সবজি যোগ করা শুরু করুন।