নানা কারণে ভঙ্গুর অবস্থায় থাকা দেশের টেলিযোগাযোগ খাতকে (বিটিসিএল, টেলিটক, টেশিস) ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এসব পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- সেবার মান বাড়ানো, সব প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করা, সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া, অবৈধ ভিওআইপি বন্ধ করা, নিয়োগ-পদোন্নতিতে দুর্নীতি-অনিয়ম দূর করা। এজন্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ভেঙে আলাদা প্রতিষ্ঠান করা হতে পারে। কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে শুরু করে জিএম-ডিজিএমসহ অনেক পদে বাইরে থেকে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ উদ্যোগ নিয়েছেন, যিনি দ্বাদশ সংসদে নতুন করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ অধিদফতরের দায়িত্বও পেয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের বিশ্বস্ত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
টেলিযোগাযোগ খাতকে দুর্নীতিমুক্ত ও লাভজনক করতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনসহ (বিএমপিসিএ) সচেতন মহল।
বিটিসিএলকে যেভাবে ঢেলে সাজানো হবে:
বিটিসিএল ভেঙে হতে পারে আলাদা প্রতিষ্ঠান: সেবার মানোন্নয়ন ও প্রতিযোগিতায় ফেরাতে বিটিসিএলকে ভেঙে আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান করে দিতে পারে সরকার। যেমন- ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি), ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স), ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিও)ইত্যাদি। এছাড়াও পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন)-কে আলাদা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়ে আলাদা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। ফলে সেবার মান বাড়বে, বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে, সরকারের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
অভিজ্ঞদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হতে পারে: প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে শুরু করে জিএম, ডিজিএম এবং বাজার ও বিক্রয় ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে বাইরে থেকে অভিজ্ঞদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। কেবল স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণ, টেকনিক্যাল ও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণে এবং সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিযুক্ত থাকতে পারেন।
নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি: দুর্নীতির (বিশেষ করে বিগত দিনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ) তদন্তের জন্য নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করা হতে পারে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।
থাকবেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা: পরিচালনা বোর্ডে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি এবং গ্রাহক প্রতিনিধিদের রাখা হতে পারে।