1. junayed@bijoy.tv : বিজয় নিউজ ডেস্ক : বিজয় টিভি নিউজ ডেস্ক
  2. dcm01@bijoy.tv : বিজয় টিভি নিউজ ডেস্ক : বিজয় টিভি নিউজ ডেস্ক
  3. rafi@bijoy.tv : বিজয় নিউজ ডেস্ক : বিজয় টিভি নিউজ ডেস্ক
  4. rubel@bijoy.tv : support_admin :
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
ঢাকা শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

বিজয় টিভি নিউজ
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪
  • ১৮৫ বার পড়া হয়েছে
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ভারতের উত্তর সিকিমে ভারী বর্ষণসহ উজান থেকে নেমে আসা ঢলে রংপুরের প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এরইমধ্যে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করছে। অন্য নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে।

এতে নদ-নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রংপুরের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

এদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার কাউনিয়া, পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা অববাহিকার বেশ কয়েকটি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। পাউবো কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর অনেকে নিরুপায় হয়ে বসতি সরিয়ে নিচ্ছে। বেশ কিছু চরাঞ্চলের বাড়িঘরের চারপাশে পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে।

তলিয়ে গেছে গ্রামীণ সড়ক। ডুবে গেছে ওইসব এলাকার সবজিক্ষেত। ভাঙনের কিনারে নিরুপায় দিনযাপন করছে অনেক দিনমজুর পরিবার। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানায়, রংপুর জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর অঞ্চলে ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার সকাল নয়টায় তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে শূন্য দশমিক ২০ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে ভোর ছয়টায় ওই পয়েন্টে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা ২৮ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার ধরা হয়।

অপরদিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে বুধবার সকাল নয়টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৬টায় যা রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। সূত্র বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডালিয়া পয়েন্টে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিস্তার পানি বেড়ে ক্রমশ বিপৎসীমার পথে রয়েছে।

পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের শিবদেব পানিয়ালের ঘাট এলাকায় দেখা যায়, নদীতে ঘোলা পানির স্রোত বইছে। চরের অধিকাংশ জমি পানি নিচে নিমজ্জিত। কৃষকের ফসলি জমিতে ধরেছে ভাঙন। কেউ কেউ নদীর পাড়ে বাদাম তুলে স্তূপ করে রেখেছেন। স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন ধরে পানি প্রবাহ বেড়েছে। কখনো পানি বাড়ছে আবার কমছে। ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

গাবুড়ার চরের কৃষক জাফর আলী বলেন, আমি ২০ দোন (জমির পরিমাপ) জমিতে বাদাম করেছিলাম। হঠাৎ করে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বাদাম সংগ্রহ করতে পারিনি। এতে আমার প্রায় ২ লাখ টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চেয়ারম্যান, মেম্বার বা কেউ আমাদের খোঁজখবর নিতে আসেনি। আরেক কৃষক মুকুল মিয়া বলেন, আমি ৭ দোন জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম। এক দোন মাটির বাদাম পানির স্রোতে ভেসে গেছে।

কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গদাই গ্রামের বাসিন্দা মজিরন নেছা জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় ওই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। তিস্তা তীরবর্তী কয়েকটি এলাকার গত দুই সপ্তাহে অন্তত ১৫-২০টি বসতঘর ও স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। পাশাপাশি হুমকিতে রয়েছে গদাইসহ আশপাশের তিন গ্রামের কয়েকশ বসতভিটা, স্কুল ও মসজিদ।

কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের মানুষদের মধ্যে দুর্ভোগের আতঙ্ক রয়েছে। নদীর তীরবর্তী আবাদি জমিগুলো তলিয়ে গিয়ে বাদাম ও শাক-সবজিসহ উঠতি বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হবে। নদীর নিম্নাঞ্চল হালকা প্লাবিত হয়েছে। হঠাৎ পানি বাড়ার ফলে গবাদি পশুপাখি নিয়ে মানুষজন বিপাকে পড়ার আশঙ্কা করছেন।

পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে বন্যাসংক্রান্ত প্রতিনিয়ত খোঁজখবর রাখছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার উপক্রম হলে বা গেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।

কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক বলেন, উজানের ঢলে বন্যায় যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে সরকারিভাবে সব ধরনের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের মানুষের পরিস্থিতির খোঁজ-খবর রাখতে বলেছি। কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলে সরকারিভাবে তাদের সহায়তা করা হবে।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না জানান, এখনো প্লাবন পরিস্থিতি হয়নি। তবুও তারা সতর্ক রয়েছেন। নদীর চরাঞ্চলে বসবাস করা বাসিন্দাদের উঁচু জায়গায় গবাদি পশুসহ অন্যান্য সামগ্রী রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, বন্যা হলে রেসকিউ করার জন্য টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের ঢল আর গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডালিয়া ব্যারেজের সবকটি গেই খুলে রাখা হয়েছে। কাউনিয়া পয়েন্টে কিছুটা বাড়ছে পানি প্রবাহ। এছাড়া ভাটির অঞ্চলে সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, বন্যা মোকাবিলায় মাঠ পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরে থাকা মানুষজনকে নিরাপদে থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে লালমনিরহাট সদর, জেলার পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ, আদিতমারী, নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা, রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা, কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় বাদাম, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়েছে।

এ বিষয়ে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, অসময়ের বন্যা ও ভাঙনে প্রতি বছর এক লাখ কোটি টাকার সম্পদ তিস্তার গর্ভে চলে যায়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য তিস্তা খনন, সংরক্ষণ ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিকল্প নেই।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন বলেন, উজানের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, ঘাঘট, করতোয়া, ব্রহ্মপুত্রসহ সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বন্যার আভাস পাওয়া যায়নি। তারপরও সরকারিভাবে সব ধরনের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া আছে, যাতে বন্যায় কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
প্রশাসনে আসছে আরও পরিবর্তন

প্রশাসনে আসছে আরও পরিবর্তন

শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ফেনীতে গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

ফেনীতে গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ড. ইউনূস

ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ড. ইউনূস

শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কমলো স্বর্ণের দাম

সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
বিজিবিকে যে অনুরোধ করল বিএসএফ

বিজিবিকে যে অনুরোধ করল বিএসএফ

শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সাম্প্রতিক পোস্ট

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সর্বসত্ব সংরক্ষিত ২০২৪ বিজয় টিভি || All Rights Reserved.