আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চাই আমাদের দেশ আরো এগিয়ে যাবে, সেজন্য যথাযথ বিনিয়োগ প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী যারা বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করে তাদেরকে আমরা আহ্বান জানাব আমাদের সমুদ্রের তেল, গ্যাস উত্তোলনের জন্য। আমরা এরইমধ্যে আলোচনা করেছি এবং আন্তর্জাতিক টেন্ডারও দিয়েছি। আমরা যেন এগুলো ভালোভাবে উত্তোলন করতে পারি, অর্থনীতিতে কাজে লাগাতে পারি।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘দ্য টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোন অ্যাক্ট-১৯৭৪’র সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হব না। আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার মতো সক্ষমতা আমাদের থাকতে হবে। পাশাপাশি আমাদের দেশ স্বাধীন দেশ। স্বাধীন দেশে যা প্রয়োজন আমরা সেটা করে যাব। সেভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সুবিশাল জলরাশিকে নিরাপত্তার জন্য নৌবাহিনীর দায়িত্ব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা যথাযথভাবে পালন করে যাচ্ছে তারা। নৌবাহিনীকে আমি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে উন্নত করেছি। আসলে সব বাহিনীকেই আমি উন্নত করেছি। ভৌগোলিকভাবে আমরা ছোট দেশ হলেও জনসংখ্যা দিক থেকে আমরা ছোট না। তাছাড়া জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আমরা অবদান রাখছি। সেখানে যারা কর্তব্য পালন করতে যাবে, তারা সব দিক থেকে দক্ষ হউক সেটা আমি চাই। প্রশিক্ষণটা দরকার।
তিনি বলেন, আমাদের এরইমধ্যে চারটি মিলিটারি একাডেমি করা হয়েছে, পরিকল্পনা আছে প্রত্যেকটা বিভাগে মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করে দেব। সমুদ্রের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য লোক দরকার। আমরা দক্ষ জনশক্তি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। আরো দক্ষ জনশক্তি যেন হয় সে উদ্যোগটা আমরা নেব। আমাদের সমুদ্রের যে সম্পদ রয়েছে, মৎস্যসম্পদ বা সামুদ্রিক অন্যান্য উদ্ভিদ, বিশেষ করে আমাদের খনিজসম্পদ, তেল, গ্যাস উত্তোলন, সব কাজ আমাদের করতে হবে। যেটা আমাদের দেশের জন্য প্রয়োজন। এগুলো নিরাপত্তার জন্য আমাদের নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করে দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকের সেমিনারে যারা সম্পৃক্ত, বক্তব্য দেবেন বা পরামর্শ দেবেন, আন্তর্জাতিকভাবে যারা বিদেশি অতিথি এসেছে, আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমি সবাইকে আহ্বান করব, আপনারা আসুন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন, আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানে যারা বিনিয়োগ করবে তারা লাভবান হবেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, আমাদের আছে তরুণ সমাজ, তারা অত্যন্ত মেধাবী। তাদেরকে যদি আমরা ভালোভাবে শিক্ষা দীক্ষা দিয়ে তৈরি করতে পারি, বাংলাদেশ আর পেছন ফিরে তাকাবে না। আমরা পেছনের দিকে ফিরে তাকাতে চাই না। আমরা এগিয়ে যাব বীরদর্পে, একাত্তরে যেভাবে বিজয় অর্জন করেছি।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নৌপরিহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান। অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামুদ্রিক বিষয়ক ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম।