অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসে রয়েছেন। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিগতে দেড় দশকে গুম খুনের মাধ্যমে ভোট ও নাগরিক অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল। মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, দুর্নীতি বিচারবিভাগের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এই দুর্নীতি বুদ্ধিবৃত্তিকও হতে পারে। বিচারবিভাগকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রচলিত ধারণা অর্থনৈতিক লেনদেনকে বুঝালেও বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্নীতি ডায়নামাইট থেকেও ধ্বংসাত্মক, ক্যানসারের থেকেও মরণঘাতি। সুতরাং শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে বিচার বিভাগের সব জায়গার থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নৈতিক দায়িত্ব এবং এটি বড় চ্যালেঞ্জ। মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার একটি সুযোগ আমরা পেয়েছি। সব অবস্থায় আইনের শাসনকে মূল্য দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ৩৬ জুলাই থেকে কেউ বিচার বহির্ভূত হত্যার স্বীকার হয়নি। যার কৃতিত্ব আইন উপদষ্টা ড. আসিফ নজরুলের। অন্তর্বর্তী সরকার কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, জনগণের সরকার।
এছাড়া অভিভাষণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, গায়েবি মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি এই অন্তর্বর্তী সরকার সমর্থন করে না। ঢালাওভাবে মামলা দিয়ে হয়রানি করার সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে। এক্ষেত্রে বিচারকদের দেখতে হবে অযথা নাগরিকরা যেন হয়রানি না হয়।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, এমন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে যেখানে মানুষ ন্যায় বিচার পায়। শেখ হাসিনার ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে বিচার বিভাগ থেকে অনেক অবিচার হয়েছে। বিচার বিভাগ থেকে যেন আর কোনো অবিচার না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
বিচারপতিদের উদ্দেশে আইন উপদেষ্টা বলেন, বিচারবিভাগে যদি এমন কোনো বিচারক থাকেন, যিনি মানুষের কাছ থেকে তরবারি উপহার নেন, ছাত্র সংগঠনের কাছ থকে ফুল উপহার নেন, মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেন। বিচারবিভাগের জন্য এসব ভালো কিছু না।
বিচারবিভাগের সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, এরইমধ্যে কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমরা প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ঢালাও মামলা করে মানুষ হয়রানি থেকে বের হতে চাই।
আইন উপদেষ্টা বলেন, গরিব দেশে সবচেয়ে বেশি থাকবে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট। এখন যারা ব্যক্তিগত গাড়ি পাচ্ছে, আমি তা সমর্থন করি না। আমি নিজেও গাড়ি চাইনি। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় গাড়িতে চড়তে আমাকে বাধ্য করা হয়েছে।