জিম্মিদের বাঁচানো নয় বরং হামাসকে ধ্বংস করাই ইসরায়েলের লক্ষ্য। ফরাসি সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স টুয়েন্টি ফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে এ মন্তব্য করেছেন লেবানিজ-আমেরিকান গবেষক হুসেন ইবিশ। শুক্রবার ভোরে যুদ্ধবিরতি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আবারও যুদ্ধ শুরু হয়। এ বিষয়ে তার মতামত জানতে চাওয়া হলে এমন মন্তব্য করেন ইবিশ। শুক্রবার (১ ডিসম্বের) এক প্রতিবেদনে এই খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি।
আবারও যুদ্ধ শুরু হওয়ায় ইসরায়েলে বাকি ১৩৭ জিম্মির ভাগ্য অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। আরেকটি যুদ্ধবিরতি সম্ভব কি না তা নিয়ে ভাবছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলো। এরইমধ্যে গত শুক্রবার অবরুদ্ধ গাজা অঞ্চলে পুনরায় যুদ্ধ শুরু হলে একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতির আশায় গুড়ে বালি পড়ে। দ্রুত ও ক্রমবর্ধমান এ সংঘাতকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য ওয়াশিংটনের আরব উপসাগরীয় রাজ্য ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রেসিডেন্ট স্কলার হুসেন ইবিশের সাথে কথা বলেছে ফ্রান্স টুয়েন্টি ফোর।
ফ্রান্স টুয়েন্টি ফোরকে গবেষক ইবিশ বলেন, ইসরায়েল এখন যেকোনও মূল্যে হামাসকে ধ্বংস করতে চায়। উত্তর গাজার মতো এবার দক্ষিণ গাজাকে টার্গেট করেছে ইসরায়েল। তারা সেখানে হামলা চালিয়ে তাদের ভূগর্ভস্ত ঘাঁটি ধ্বংস করে হামাস যোদ্ধা ও তাদের নেতৃত্বকে শেষ করতে চায়।
আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অভ্যন্তরীণ চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েল কেন গাজায় পুনরায় আক্রমণ শুরু করেছে এ বিষয়ে ইবিশ বলেন, ইসরায়েলের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাদের সেনাদের জীবন। ইসরায়েলি সেনাদের বিনিময়ে হামাস তাদের যোদ্ধাদের, এমনকি ইসরায়েলের কারাগারে থাকা কিছু নেতাদের মুক্তির দাবিও করতে পারে। তবে এই ধরনের বিনিময়ে ইসরায়েলের আগ্রহী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি সরকার জিম্মি আলোচনার চেয়ে যুদ্ধে বেশি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাকি জিম্মিদের অনেকের মুক্তির জন্য আরেকটি যুক্তিসঙ্গত চুক্তি হতে পারে এমন কোনও ইঙ্গিত দেয়নি নেতানিয়াহু সরকার। তাদের লক্ষ্য হামাসকে ধ্বংস করা, জিম্মিদের বাঁচানো নয়। এটি কখনই ‘জিম্মিদের বাঁচানোর যুদ্ধ’ ছিল না। তবে এটি নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও পূরণ করতে পারেনি।
হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ওইদিন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, হামাস ‘আজকে সব নারী জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার শর্ত পূরণ করেনি এবং তারা ইসরায়েলি নাগরিকদের উপর রকেট হামলা চালিয়েছ।’
এদিকে, গাজায় ‘যুদ্ধ ও আগ্রাসন পুনরায় শুরু করার’ জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে হামাস। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর জন্য আগ্রহী ছিল। তবে অন্যান্য কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়ার সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে তেল আবিব।